‘নূতন ইংরেজি শিক্ষার ঔদ্ধত্যের দিনে শিশু বঙ্গভাষাকে বহু যত্নে কৈশােরে উত্তীর্ণ করিয়া দিয়াছেন’—দেবেন্দ্রনাথ সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথের এই উক্তি কতদূর সার্থক তা আলােচনা কর।

বাংলা গদ্য-সাহিত্যে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভূমিকা

দেবেন্দ্রনাথ ছিলেন প্রধানত সমাজ ও ধর্মক্ষেত্রের সংস্কারক। রামমােহন রায় এবং দ্বারকানাথ ঠাকুর যে ব্রাহ্মধর্মের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার বিকাশ ঘটেছিল মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাতে। ‘তত্ত্ববােধিনী সভা’ ও ‘তত্ত্ববােধিনী পত্রিকা’ দেবেন্দ্রনাথের সেই ধর্মীয় প্রেরণারই ফসল। তবে বাস্তব জীবনের সঙ্গেও তার যােগ ছিল সুগভীর। তখনকার সামাজিক বিষয়ের সঙ্গে তিনি ছিলেন খুবই জড়িত। দেশের শিল্প, সংগীত, ভাষা, সাহিত্য, শিক্ষা প্রভৃতি বিষয়ের সঙ্গে তার প্রযত্ন ও মনীষার যােগ ছিল। তিনি ছিলেন ‘সর্বতত্ত্বদীপিকাসভার’ সম্পাদক। এই সভার অনুষ্ঠানপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘গৌড়ীয় ভাষার উত্তমরূপে অর্চনার্থে এই সভা সংস্থাপিত’।

১৮৫৩ খ্রীষ্টাব্দে দেবেন্দ্রনাথের সর্বপ্রথম বাংলা রচনা, উপনিষদের বঙ্গানুবাদ শুরু হয়। তিনি ১৮৪৮ খ্রীষ্টাব্দ থেকেই মূল ঋগবেদের অনুবাদ করতে শুরু করেন। ১৮৪৮ খ্রীষ্টাব্দ থেকে ১৮৭১ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত ‘তত্ত্ববােধিনী’ পত্রিকায় ঋগবেদের সেই অনুবাদ প্রকাশিত হতে থাকে। ১৮৪৮ খ্রীষ্টাব্দেই তিনি ‘ব্রাহ্মধর্মগ্রন্থ’ রচনা করেন। ১৮৫০-৫১ খ্রীষ্টাব্দে দেবেন্দ্রনাথের ‘আত্মতত্ত্ববিদ্যা’ প্রকাশিত হয়। ‘ব্রাহ্মধর্মের’ মত ও বিশ্বাস প্রকাশিত হয় ১৮৬০ খ্রীষ্টাব্দে। এটি মােট দশটি বক্তৃতার সংকলন। এতে ধর্মতত্ত্ববিৎ (Theologian) দেবেন্দ্রনাথের পরিচয় পাওয়া যায়। অতঃ পর ১৮৬১ ও ১৮৬২ খ্রীষ্টাব্দে যথাক্রমে পশ্চিম প্রদেশের দুর্ভিক্ষ উপশমের সাহায্য সংগ্রহার্থে ‘ব্রাহ্মসমাজের বক্তৃতা’ এবং ‘ব্রাহ্মসমাজের উপদেশ’ প্রকাশিত হয়।

তার গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল, ‘ব্রাহ্মধর্মের ব্যাখ্যান, ‘ব্রাহ্মধর্মের বিবাহ প্রণালী’ ও ‘ব্রাহ্মসমাজের পঞ্চবিংশতি বৎসরের পরীক্ষা বৃত্তান্ত’। ১৮৬৪ খ্রীষ্টাব্দে তার ‘ব্রাহ্মধর্মের অনুষ্ঠান’ পদ্ধতি প্রকাশিত হয়। ১৮৯৫ খ্রীষ্টাব্দে ‘পরলােক ও মুক্তি’ প্রকাশের পর তার ‘আত্মজীবনী’ ছাপা হয় ১৮৯৮ খ্রীষ্টাব্দে, দেবেন্দ্রনাথ তাঁর গ্রন্থস্বত্বাধিকার দানপত্রে লেখেন—’১৮ বৎসর হইতে ৪১ বয়ঃক্রম পর্যন্ত আমার জীবন কাহিনী উনচল্লিশ পরিচ্ছেদে সমাপ্ত’। ‘আত্মজীবনী’ প্রকৃতপক্ষে দেবেন্দ্রনাথের ধর্মচিন্তা ও তত্ত্বজ্ঞান লাভের ব্যক্তিগত বিবরণী।

তার গদ্য রচনাবলীর মধ্যে উল্লেখযােগ্য আর একটি বিষয় হলাে তার পত্রাবলী। ১৮৫০ খ্রীষ্টাব্দ থেকে ১৮৮৭ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে নানা পত্রে তাঁর যে যােগাযােগ ঘটে, প্রিয়নাথ শাস্ত্রী কর্তৃক সেগুলি পত্রাবলীর অন্তর্ভুক্ত হয়।

১৮৪০ খ্রীষ্টাব্দ থেকে ১৮৯৫ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত দীর্ঘকাল- দেবেন্দ্রনাথ বাংলা গদ্যরচনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি যে যুগে বাংলা গদ্য রচনায় প্রথম মনােযােগী হন, তখনও অক্ষয়কুমার দত্ত বাংলা গদ্য লেখক হিসেবে পরিচিত হন নি। প্রৌঢ় বয়সে যখন তিনি ‘ব্রাহ্মধর্মের ব্যাখ্যান লেখেন, তখন আমাদের গদ্যরচনার ধারায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রতিভা সমকালীন প্রবীণ ও নবীন গদ্য- রচয়িতাদের কাছে পথ-নির্দেশক রূপে উপস্থিত। যখন তিনি তাঁর আত্মজীবনী এবং জ্ঞান ও ধর্মের উন্নতি প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেছেন, বঙ্কিমচন্দ্রের প্রতিভা তখন ছিল সমুন্নত শিখরে এবং ছােটগল্পে ও প্রবন্ধ রচনার পথে রবীন্দ্রনাথও বাংলা গদ্য রচনায় আত্মনিয়ােগ করেছেন।

দেবেন্দ্রনাথের গদ্য তার নিজের কালেই বিভিন্ন মনীষীর দ্বারা সমাদৃত হয়। রাজনারায়ণ বসু তার বাংলাভাষা ও সাহিত্যবিষয়ক বক্তৃতা’ গ্রন্থে লেখেন—“তিনি তত্ত্ববােধিনী পত্রিকা প্রকাশ না করিলে এবং বহুল আয়াস ও পরিশ্রম স্বীকার পূর্বক প্রথম তত্ত্ববােধিনী পত্রিকায় প্রস্তাবগুলি বিশেষরূপে সংশােধিত করিয়া না দিলে বাঙ্গালা ভাষার উন্নতির পত্তনভূমি সংস্থাপিত হইত না। বিদ্যাসাগর মহাশয় যেমন আপনার প্রণীত ‘বেতাল-পঞ্চবিংশতি’ গ্রন্থদ্বারা বঙ্গভাষার বর্তমান উন্নতির সূত্রপাত করেন, দেবেন্দ্রবাবুও সেই একই সময়েই পত্রিকা প্রকাশ ও সংশােধন দ্বারা সেই উন্নতির প্রথম সূত্রপাত করেন।”

দেবেন্দ্রনাথের গদ্যে জ্ঞানান্বেষণ ও জ্ঞানানুরাগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল তার অনন্যসাধারণ কল্পনাশক্তি, রসপ্রবণতা ও সৌন্দর্যবােধ। তার অনেকগুলি গদ্য নিবন্ধে ঈশ্বর সম্বন্ধে তিনি স্বীয় উপলব্ধি প্রকাশ করেছেন। ব্রাহ্মধর্ম প্রভৃতি ভাবনাতেও তার গদ্য তত্ত্বভাবে কণ্টকিত হয় নি। সেই তত্ত্বের সঙ্গে সরসতা বিদ্যমান।

তার গদ্যে স্বাচ্ছন্দ্য ও স্বচ্ছতার লক্ষণ সে যুগের পক্ষে প্রায় অবিশ্বাস্যভাবে বিদ্যমান। বাক্য বিন্যাসে ও শব্দ-নির্বাচনে তিনি ছিলেন সচেতন এবং ভাবের সঙ্গে বাক্যের সামঞ্জস্য বিধানে খুবই যত্নশীল লেখক। দেবেন্দ্রনাথের আত্মজীবনীর পরিশিষ্টে ক্ষিতীন্দ্রনাথ ঠাকুর সে কথার উল্লেখ করে লেখেন- ‘তাহার হত্ত দিয়া যে সকল লেখা যাইত, বা তাহাকে যাহা কিছু শােনানাে হইত, তাহা তিনি সংশােধনের পর সংশােধনের দ্বারা নিখুঁত না করিয়া ছাড়িতেন না, জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাহাতে এই গুণ ছিল’। আত্মতত্ত্ববিদ্যা গ্রন্থেই দেবেন্দ্রনাথের গদ্যরচনার শক্তির লক্ষণীয় প্রতিশ্রুতি বিদ্যমান। যেমন, যে সকল বস্তুকে দেখা যায়, শুনা যায়, স্পর্শ করা যায়, সেই সকল বাহ্যবস্তু, আর যে দেখে, যে শুনে, যে স্পর্শ করে, যে আঘ্রাণ করে, যে আস্বাদন করে, কিন্তু যাহাকে দেখা যায় না, শুনা যায় না, স্পর্শ করা যায় না, আঘ্রাণ করা যায় না, সেই আমি জীবাত্মা।

দেবেন্দ্রনাথের গদ্যের অন্যতম গুণ সুস্পষ্টতা। কাশ্মীর ভ্রমণের বক্তৃতা থেকেই এই লক্ষণের উদাহরণ—‘নদী দিয়া যাইতে যাইতে একটি সরােবরে আসিয়া উপনীত হইলাম। সরােবরটি গােলাকৃতি। পার হইতে দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। জল নীলবর্ণ।’ তাঁর রচনার এই সারল্য, স্পষ্টতা, সত্যবােধ ইত্যাদি সরল ঈশ্বর বিশ্বাস থেকেই জাত। পণ্ডিত শিবনাথ শাস্ত্রী লিখেছেন- ‘সকল কর্তব্যকর্মেই তাঁর ঈশ্বরের সত্তা ও সান্নিধ্যজ্ঞানের সহিত করার রীতি ছিল।’ তাঁর গদ্যে এই উপলব্ধি সঞ্চারিত করেছে বিশেষ এক স্বাদ।

দেবেন্দ্রনাথের গদ্যে সাধুরীতি ও বর্ণনা প্রবণতার সঙ্গে তার অনুভূতি গুণও লক্ষণীয়। বলা- বাহুল্য, রবীন্দ্রনাথ থেকেই বাংলা গদ্যে—অনুভূতি প্রধান বিষয় বর্ণনা, ব্যাখ্যা ও চিত্রণের এই নিঝরধারা বিস্তৃত হয়েছে, কিন্তু সেই রবীন্দ্রনাথের গদ্যেরও মূলে যে তার পিতার গদ্যরীতির প্রেরণা ছিল, এ-অনুমান ভিত্তিহীন নয়। দেবেন্দ্রনাথের গদ্যে সর্বত্রই স্বচ্ছন্দ গতি লক্ষণীয়। জ্যোতির্বিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব, জীবতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, ইতিহাস প্রভৃতি বিষয়ে দেবেন্দ্রনাথের বিভিন্ন চিন্তা সহজ সরলভাবে প্রকাশিত হয়েছে। কোথাও শব্দের বা বস্তুর দুরূহতা নেই।

দেবেন্দ্রনাথ তার গদ্যে বাক্যের অন্বয় স্বচ্ছ ও শােভন রেখে শান্ত আবেগের সঙ্গে যুক্তির ভারসাম্য রক্ষা করতে পেরেছে। হৃদয়ের সহজ সরল সৌন্দর্যের স্বাদ তার গদ্যে বিশেষভাবে অনুভূত হয়। দেবেন্দ্রনাথের গদ্যের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ তার আত্মজীবনী। এই গ্রন্থে তার ভাবুক ও সাধক চিত্তের যন্ত্রণা, সংশয়, দ্বন্দ্ব এবং আনন্দধ্বনি ছত্রে ছত্রে ছড়িয়ে আছে।

আত্মজীবনীতে একদিকে থাকে বিষয় সম্পর্কে ্রষ্টার সচেতনতা, অপরদিকে বিষয়ের উর্ধ্বে রচয়িতার সংগােপন হৃদয়। দেবেন্দ্রনাথ যেমন আত্মজীবনীতে তার নিজের কালের পরিচয় দিয়েছেন, তেমনি তার ব্যক্তিমনের অনুভূতিগুলিও ব্যক্ত করেছেন। এই অভিব্যক্তিতে ভক্ত প্রাণের সঙ্গে কবি প্রাণের সুন্দর সুসমন্বয় সাধিত হয়েছে। যেমন— ‘আমি দেখি যে, তখন সন্ধ্যা হইয়াছে, সূর্য্য অন্ত গিয়াছে; আমার তাে আবার এতটা পথ ফিরিয়া যাইতে হইবে। আমি দ্রুতবেগে ফিরিলাম। রাত্রিও দ্রুতবেগে আসিয়া আমাকে ধরিল। গিরি বন কানন, সকলই অন্ধকারে আচ্ছন্ন হইয়া গল। সেই অন্ধকারের দীপ হইয়া অর্ধচন্দ্র আমার সঙ্গে সঙ্গে চলিতে লাগিল, কোন দিকে কোন সাড়া শব্দ নাই, কেবল পায়ের শব্দ পথের শুষ্ক পত্রের উপরে খড় খড় করিতেছে।…রােমাঞ্চিত শরীরে সেই বনের মধ্যে ঈশ্বরের চক্ষু দেখিলাম-আমার উপরে তাহার অনিমেষ দৃষ্টি রহিয়াছে।’

আত্মজীবনীর আর একটি অংশে ভাষা প্রায় কাব্যময়— ‘ফাল্গুন মাস চলিয়া গেল, চৈত্র মাস মধুমাসের সমাগমে বসন্তের দ্বার উদ্ঘাটিত হইল, এবং অবসর পাইয়া দক্ষিণবায়ু আম্রমুকুলের গন্ধে সদ্য প্রস্ফুটিত লেবু ফুলের গন্ধ মিশ্রিত করিয়া কোমল সুগন্ধের হিল্লোলে দিগ্বিদিক আমােদিত করিয়া তুলিল। ইহা সেই করুণাময়েরই নিঃশ্বাস।’

একথা নিঃসন্দেহে সুপরিচিত যে দেবেন্দ্রনাথ সাহিত্যিক ছিলেন না, কিন্তু বুদ্ধিবিচার, কল্পনাশক্তি, গভীর ও সূক্ষ্ম উপলব্ধি সমন্বিত অভিব্যক্তি তার গদ্যে নিত্য নিত্য বিরাজিত। এই গুণেই তিনি বাংলা গদ্যের উন্নতির পত্তনভূমি সংস্থাপিত করে গেছেন। তাঁর গদ্যের আলােচনা প্রসঙ্গে ‘চারিত্র পূজা’ গ্রন্থে রবীন্দ্রনাথের মন্তব্যটি স্মরণীয়—দেবেন্দ্রনাথ) ‘নূতন ইংরেজি শিক্ষার ঔদ্ধত্যের দিনে শিশু বঙ্গভাষাকে বহুযত্নে কৈশােরে উত্তীর্ণ করিয়া দিয়াছেন।’

১২৫০ সালে ভাদ্রমাসে (১৮৪৩ খ্রীঃ) অক্ষয়কুমার দত্তের সম্পাদনায় তত্ত্ববােধিনী পত্রিকার প্রথম সংখ্যা ছাপা হয়। তখন থেকেই বাংলা গদ্যে সারল্য; দৃঢ়তা ও সংযম এই তিনগুণের সুস্পষ্ট অনুশীলনের লক্ষণ দেখা দেয়। অধ্যাপক সুকুমার সেন লিখেছেন, ‘তত্ত্ববােধিনী পত্রিকা বাহির করিয়া দেবেন্দ্রনাথ বাঙ্গালায় বুদ্ধিদীপ্ত গদ্যের পথ পরিষ্কার করিয়া দিলেন।

দেবেন্দ্রনাথের স্বরচিত জীবনচরিত-এর প্রশংসা করে সুকুমার সেন আরও লেখেন— ‘ঋষি দেবেন্দ্রনাথের অন্তরে যে একটি সাহিত্যিক বাস করিত সে দ্বিজেন্দ্রনাথ রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যগুরু। দেবেন্দ্রনাথের এই সাহিত্যিক স্বরূপের পরিচয় তাহার প্রকাশিত আনুষ্ঠানিক রচনায় নাই, আছে অন্তরঙ্গ সুহৃদ আত্মীয়-বন্ধুদের কাছে লেখা পত্রাবলীতে। এই পত্রাবলীতে এবং তাহার স্বরচিত জীবনচরিতে দেখিতে পাই যে অক্ষয়কুমার বিদ্যাসাগরের সমান্তরালে দেবেন্দ্রনাথ অজ্ঞাতসারে বাঙ্গালা গদ্যের একটি নিজস্ব স্টাইল নির্মাণ করিতেছেন। দেবেন্দ্রনাথের ষ্টাইল ও তাহার চিঠি-লেখার ভঙ্গি তাহার সন্তানেরা, বিশেষ করিয়া জ্যেষ্ঠ ও কনিষ্ঠ পুত্র লাভ করিয়াছিলেন।’

অনার্স বাংলা প্রথম পত্রের সব প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment