সম্মোধন
কবি মৃদুল দাশগুপ্তের রচিত ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় কবি ২০০৬-২০০৭ খ্রিস্টাব্দের সিঙ্গুর কৃষি জমি রক্ষার গণ-আন্দোলনে শাহিদ হওয়া মানুষদের ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করেছেন।
কবির প্রতিক্রিয়া
কবির মানব দরদি মন দেখেছে ‘নিহত ভাইয়ের শবদেহ’ । তাই তার মনে ক্রোধে সৃষ্টি হয়েছে। তিনি দেখেছেন সন্তানহারা জননীর চোখে জলের ধারা। তিনি উপলব্ধি করেছেন সন্তান হারা জননের পাশে দাঁড়াতে না পারলে তার সাহিত্যচর্চা বৃথা। শাসকের রক্ত চক্ষু দেখে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। তাই ভাগ্যের হাতে ভবিষ্যৎ সঁপে দিয়ে অসহায় দেশবাসী দুঃখ কষ্টে জীবন যাপন করছে।
কিন্তু কবির ‘ভাইয়ের শবদেহ দেখে’ জাগ্রত বিবেকের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। বিবেক সম্পন্ন, মূল্যবোধ যুক্ত এবং সংবেদনশীল মন কবিকে বিস্মিত করেছে। তাই কবি লিখেছেন-“নাই যদি হয় ক্রোধ/ কেন ভালোবাসা, কেন বা সমাজ/ কিসের মূল্যবোধ !” ভাইয়ের মৃতদেহ দেখে মনের মধ্যে ক্রোধের সঞ্চার হওয়াটা স্বাভাবিক। সমাজের প্রতিটি মানুষের সঙ্গে প্রতিটি মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক যদি ভালোবাসা দিয়ে গড়া হয় তবেই জীবনের সার্থকতা। বিপদ থেকে দূর না থেকে বিপদকে মোকাবিলা করতে হবে। বিবেকবান সত্তা তার মধ্যে তৈরি করেছে ক্রোধ, যে ক্রোধ থেকে তিনি কলম ধরেছেন শব্দের শক্তি দিয়ে বিপ্লব গড়ার লক্ষ্যে।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর