প্রসঙ্গ
অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নানা রঙের দিন’ নামক একাঙ্ক নাটকের মূল কাহিনী বিগত দিনের এক জনপ্রিয় অভিনেতার এক রাত্রির অনুভবন কেন্দ্রিক। তিনি বর্তমানে জীবন সায়াহ্নে এসে পৌঁছেছেন। শূন্য মঞ্চে স্মৃতিময় অন্ধকারে অতীতের গৌরবময় জীবনকে তিনি স্বাগতম সংলাপের মধ্যে দিয়ে স্মরণ করেছেন। জীবনের না পাওয়াকে, বিরল মুহূর্তে নিজেরই অভিনীত নাট্য দৃশ্যের উচ্চারণে ভুলে যান রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়। সেই সূত্রে এই নাটকে ‘রিজিয়া’ এবং ‘শাজাহান’ নাটকে অংশ ব্যবহৃত।
রজনী চাটুজ্জের মানসিকতার প্রতিফলন
অভিনয়ে অভিনেতার মুক্তি এবং প্রতিভার ঐশী স্পর্শে একজন শিল্পী মৃত্যুকে ও ভালোবেসে জয় করেন। নাট্যাভিনয় যার প্রাণ, নাটকের জন্য হাসিমুখে জীবনের সর্ব সুখ ত্যাগ করা অভিনেতা রজনী চাটুজ্জে মানসিকতার প্রতিফলন ‘রিজিয়া’ নাটকের সংলাপে পাওয়া যায়।
“….. মৃত্যু ভয় দেখাও কাহারি? জানান নাকি তাতার-বালক মাতৃ অংক হতে ছুটে যাই সিংহ শিশু-সনে করিবারে মলরণ? বখতিয়ার মরিতে প্রস্তুত সদা।”
আত্মগ্লানীর সঙ্গে একাত্মকরণ
আবার সারা জীবনের কাজের পর আজ ক্ষোভ, একাকীত্ব, বেদনা, অসম্মান, অবমাননা যখন রজনীকান্তের ৬৮ বছরের জীবনকে হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছে, তখন তিনি দেখেছেন মৃত্যুর প্রত্যক্ষতা, যা ছায়া হয়ে মঞ্চের অন্ধকারে ছড়িয়ে পড়েছে। সামনে শ্মশানের চিতার লেলিহান শিখা। এই একাকিত্বের গ্লানি তে কোথাও ও একইভাবে লিন হয়ে রয়েছে ঔরঙ্গজেবও, চরিত্র দুটি যেন পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত।
উত্থাপনার প্রাসঙ্গিকতা
সর্বোপরি এই দুটি নাট্যাংশের স্মৃতিচারণ একদিকে রজনী চরিত্র কে হতাশা ছন্ন থেকে প্রতিভার চিরন্তর জয়ে উত্তীর্ণ করেছেন। অন্যদিকে তার চরিত্রের ভিন্ন মাত্রা উন্মোচন করে নাটকটি পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। এই কারণেই এই নাটক দুটির বিষয়ে উত্থাপন অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর