“নাট্যাভিনয় একটি পবিত্র শিল্প”- এর বক্তা কে? এ বিষয়ে বক্তার মূল বক্তব্য পাঠ্য রচনা অবলম্বনে লিপিবদ্ধ করো? অথবা, “এসব বাজে কথায় আমি বিশ্বাস করিনা।”- কোনটি বাজে কথা? তাতে বিশ্বাস না করার কারণ বুঝিয়ে দাও?

‘বাজে কথা’

সভ্যতার ইতিহাসের নাট্যাভিনয় কেবল বিনোদনের উপাদান নয়, তা পবিত্র শিল্প। এই ধারণায় অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নানা রঙের দিন’ নাটকের প্রধান চরিত্র রজনীকান্ত খন্ডন করতে চেয়েছেন। রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় ছিলেন বিগত দিনের একজন প্রসিদ্ধ অভিনেতা।। তিনি একসময় অভিনয় কে পবিত্র শিল্প বলেই মনে করতেন। কিন্তু এই অভিনয় না ছাড়ার জন্য তার সম্পর্ক হারিয়েছি। প্রেমিকা তার মন নয়, অর্থকেই বড় করে দেখেছে। তাই তিনি অনুভব করেছেন, নাট্যাভিনয় একটি পবিত্র শিল্প’এ কথাটি আসলে বাজে কথা।

রজনীকান্তের উপলব্ধি

শিল্প শিল্পীর আত্মপ্রকাশ ক্ষেত্র, শিল্পীর ঈশ্বর সাধনা। শিল্পের জন্য যে আত্মনিবেদিত। রজনীকান্ত এই সত্যকেই পরম জানতেন। শিল্পির জন্যই তার খ্যাতি, সম্মান এমনকি প্রেমও এসেছিল। কিন্তু সেই নাট্যাভিনয়ের জন্যই তার প্রেম তাকে পরিত্যাগ করলে রজনী বাস্তববোধ জেগে উঠলো। তিনি বুঝলেন অভিনেতা একজন চাকর, ক্লাউন বা জোকার মাত্র। অন্যের মনোরঞ্জনই তার কর্তব্য। হাততালি, প্রশংসা, মেডেল, সার্টিফিকেট সবই বাজে কথা। অভিনেতার কোন ব্যক্তিগত জীবন নেই, সামাজিক সম্মান নেই। স্টেজে থাকা চরিত্রটি তার সর্বজন খ্যাতি। স্টেজে থেকে নামলে-‘তুমি তাদের কেউ না-তুমি থিয়েটার ওয়ালা-একটা নকলনবীশ-একটা অস্পৃশ্য ভাঁড়,….।’ অভিনয় অভিনেতার সবটুকু উজাড় করে নেয়। বিনিময় তাকে মানবিক মূল্য, বেঁচে থাকার সামান্য অবলম্বন দেয় না। এই উপলব্ধি থেকে রজনীকান্ত বলেছেন নাট্যাভিনয় পবিত্র শিল্প নয়।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment