প্রশ্নদ্ধৃত উক্তিটির বক্তা হলেন ‘বিভাব’ নাটকের নাট্য সংস্থার অন্যতম চরিত্র শম্ভু মিত্র।
জীবনের হাসির খোরাক না থাকার কারণ
সদ্য স্বাধীনতা লাভের পর মন্বন্তর-দাঙ্গা-দেশভাগ জনিত কারণে ছিন্নমূল ও উদ্বাস্তু মানুষের ঢল নেমেছিল বাংলার বুকে। খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানের জন্য মানুষের মাথা কুটছে। নাট্যকার এই পরিস্থিতিতে জীবন ও জীবন সংগ্রামের প্রেক্ষাপট হিসেবে গ্রহণ করে, সরদার বল্লভ ভাই প্যাটেল এর অভিঘাত হানা এক মন্তব্য কে সামনে এনে বঙ্গ জীবনের কান্না উৎস সন্ধান করেছেন হাসির কষ্টিপাথরে যাচাই করে। তাই এই নাটক হাসির নাটক নয় ; জীবনের নাটক, সেখানে হাসি উদ্বায়ী কান্নাই বেশি। বৌদি-শম্ভু-অমর হাসির উৎস সন্ধানে প্রবৃত্ত হন। কিন্তু হাসি মেলে না।
বৌদি রাগান্বিত হয়ে চলে যান। প্রশ্ন উঠে জীবন কোথায় যে জীবনের হাসি থাকবে? হাসির খোরাক, অর্থাৎ পপুলার জিনিসের সন্ধান নিতে শম্ভু ও অমর এসে দাঁড়ান রাস্তায়-মাঠে-ঘাটে। শম্ভুর জিজ্ঞাসা-“কই হে কিছুই তো দেখা যাচ্ছে না।” অমর উত্তর দেন -“হ্যাঁ, জীবনে শুকিয়ে যাচ্ছে-এ থেকে বোঝা যায়।” শম্ভু নিশ্চয়ই বোঝেন- “নাঃ কোথাও জীবনের খোরাক, হাসির খোরাক নেই।” নাট্যভাষা একটাই বোঝায়-জীবন যদি হয় বিপর্যস্ত, তখন স্বভাবতই জীবনের রং ধরে না, তা হয় বিবর্ণ। জীবনে যদি হয় বৃক্ষ, তবে হাসি তার ফুল। সুতরাং গাছই যদি না রইল, তাহলে ফুলের অস্তিত্ব কিভাবে সম্ভব? তাই নাট্যকার কোনখানেই জীবন ও হাসি খুঁজে পান না।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর