ধারণার বৈশিষ্ট্য
একই ধরনের বস্তু সম্বন্ধে ব্যক্তি যেসব অভিজ্ঞতা অর্জন করে, সেই অভিজ্ঞতাগুলির মধ্যে যে সাধারণ গুগগুলি ফুটে ওঠে তাদের সম্পর্কে জানাই হল ধারণা। ধারণার গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি হল一
(১) প্রত্যক্ষণজাত: কতকগুলি ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষণের মধ্য দিয়েই ধারণা গড়ে ওঠে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কোনাে প্রাণীর বৈশিষ্ট্যগুলি যথাযথভাবে প্রত্যক্ষ করলে তবেই প্রাণীটি সম্পর্কে একটি নির্দিষ্ট ধারণা করা সম্ভব।
(২) বস্তুসম্পর্কিত অভিজ্ঞতা: প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীর মধ্যে ধারণা গঠনের ক্ষেত্রে বস্তুগত বা মূর্ত অভিজ্ঞতার প্রয়ােজন। হয়। পরবর্তী পর্যায়ে শিক্ষার্থীর বয়স বাড়ার সাথে সাথে বিমূর্ত বিষয়কে কেন্দ্র করেও ধারণা গড়ে উঠতে পারে।
(৩) শিখনযােগ্যতা: ধারণাগুলির মধ্যে শিখনযােগ্যতার পার্থক্য দেখা যায়। মূর্ত ও দৃষ্ট বস্তু, যেমন-বিড়াল, কুকুর, বৃক্ষ ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা, বিমূর্ত এবং দৃষ্ট নয়, যেমন—অণু, বাৎসল্য ইত্যাদি সম্পর্কিত ধারণার চেয়ে সহজে শেখা যায়।
(৪) ব্যক্তিভেদে পৃথক: ব্যক্তিভেদে ধারণা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। একই বস্তু একাধিক ব্যক্তির কাছে বিভিন্ন ধারণা তৈরি করতে পারে।
(৫) যথার্থতা: কোনাে ধারণার যথার্থতা নির্ভর করে অভিজ্ঞ ব্যক্তিগণ সেই ধারণার অর্থ ও সংজ্ঞার ক্ষেত্রে কতখানি একমত পােষণ করেন, তার ওপর।
(৬) ক্ষমতা: বিভিন্ন বিষয়ের কতকগুলি মৌলিক ধারণা থাকে, যা অন্যান্য ধারণা গঠনের, ক্ষেত্রে সহায়ক হয়। মৌলিক ধারণার এই অন্যান্য ধারণা গড়ে তােলার গুণকে ক্ষমতা বলে।
(৭) ধারণার প্রকারভেদ: ধারণা মূর্ত বা বিমূর্ত হতে পারে ঘর, বাড়ি, তরল পদার্থ ইত্যাদি মূর্ত ধারণা। সততা, স্নেহ, শিষ্টাচার ইত্যাদি বিমূর্ত ধারণার উদাহরণ। বিমূর্ত ধারণা পক্ষীরাজ ঘােড়া, পরি, কাল্পনিকও হতে পারে, যেমন- রাক্ষস ইত্যাদি।
(৮) জটিল প্রক্রিয়া: ধারণা গঠনের প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে অনেকগুলি স্তর থাকে। স্তরগুলিকে নিম্নলিখিত পর্যায়ে সাজানাে যায়
পর্যবেক্ষণ→বিশ্লেষণ→তুলনা→নামকরণ→সামান্যীকরণ→পৃথককরণ
ওপরের পর্যায়গুলি যথাযথভাবে এবং পর্যায়ক্রমে না ঘটলে ধারণা গঠনের কাজটি ব্যাহত হয়।