“দেখতে দেখতে প্রচন্ড উত্তেজনা ছড়ালো চারদিকে।” -প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এই উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনা বিবরণ দাও?

প্রসঙ্গ

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে পৌষালী অকাল দুর্যোগে এক থুত্থুরে বুড়ির আগমন ঘটে। এবং তাকে ঘিরেই আবর্তিত হতে থাকে গল্প। বুড়ি মারা গেছে ধরে নিয়ে, সরকারি আইন রক্ষক চৌকিদারের পরামর্শে কিছু হিন্দু বুড়ির সেই মৃতকল্প দেহ বাসের চ্যাং দোলায় বহন করে শুকনো নদীর চড়াই ফেলে দিয়ে আসে। পরে কিছু মুসলমান ওই একই চ্যাংদোলায় দেহটি বাজারে ফিরিয়ে নিয়ে আসা শুরু হয় গায়ের মোল্লাসাহেব ও ভটচাজমশায়ের নেতৃত্বে দেহ নিয়ে প্রথম বচসা, পরে গালিগালজ। অবশেষে বাসের চ্যাংদোলা নিয়ে দুই সম্প্রদায়ের টানাটানি শুরু হওয়ার চারদিকে উত্তেজনা ছড়িয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গের কথা বলা হয়েছে।

উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনার বিবর

বলা বাহুল্য এই উত্তেজনার পিছনে সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছিল। তার ওই প্রতিশ্রুতিতে সব দোকানগুলোর ঝাঁপ বন্ধ হতে থাকে। চতুর্দিকে গ্রামগুলি থেকে উভয় সম্প্রদায়ের মানুষজন সশস্ত্র অবস্থায় ঘটনাস্থলে জড়ো হতে শুরু করে। পিচের রাস্তায় চ্যাংদোলায় স্থায়ী তো বুড়ির দেহকে রেখে দু’পাশের জনতা পরস্পরকে গালমন্দ, প্রলচনামূলক উক্তি-প্রত্যুক্তি করতে থাকে। মোল্লা সাহেব সৎ সাহসের হুংকার ছাড়েন- ‘মোসলেম ভাই সকল ! জেহাদ, জেহাদ ! নারায়ন তবকির-আল্লাহু আকবর!’ ভটচাজমশাই ও পাল্টা গর্জে ওঠে-‘জয় মা কালী! যবন নিধনে অবতীর্ণ হও মা! জয় মা কালী কি জয়!’ এসবের মাঝে পড়ে বিপন্ন বেচারা আইন রুক্ষ চৌকিদার কখনো ও ‘সাবধান!’ , কখনো ও ‘খবরদার!’ বলে চ্যাঁচাতে থাকে। তবে তার এই আন্তরিক প্রচেষ্টা উন্মত্ত জনতার মনে কোন ইতিবাচক সারা ফেলতে পারেনা। শুধু চৌকিদার লাঠি থেকে ‘খট খট খট খট’ শব্দ পরিস্থিতিকে আরো বেসামাল করে দেয়।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment