মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবর্তন
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে, গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় ধীরে ধীরে বোতলে গিয়েছিল। ‘নিরীহ শান্ত, দরদী ভালো মানুষ, মৃত্যুঞ্জয় অত্যন্ত ‘সৎ ও সরল’ বলেই জড়িয়ে পড়েছিল এমন এক পরিস্থিতির বেড়াজালে। প্রথমে এক বেলা খাওয়া ছেড়ে মাইনে সমস্ত টাকা নিখিলের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিত রিলিফ ফান্ডে। শহরের আদি অন্তহীন ফুটপাথে, বিভিন্ন লঙ্গরখানায় ঘুরে অন্নপ্রার্থী মানুষের ভিড়ে মিশে সে বুঝে নিতে চেয়েছিল- “কোথা থেকে কিভাবে কেমন করে সব ওলট পালট হয়ে গেল”। পরিবর্তিত সমাজ পরিবেশের সঙ্গে মৃত্যুঞ্জয়ের মন অভিযোজিত হতে পারেনি। ‘কিছুই কি করা যায় না।’ -এই এক চিন্তা তাকে ঠেলে দিয়েছিল নৈরাশ্যের গাড়ো অন্ধকারে। আর এইসবের অনিবার্য পরিণতিতে মৃত্যুঞ্জয় ক্রমে অমনোযোগী হয়ে পড়েছিল অফিসের কাজে। একটা সময় পর থেকে দায়িত্ববোধ সম্পন্ন মৃত্যুঞ্জয় দেরি করে অফিসে আসতো, কাজ ভুল করত, চুপ করে বসে থেকে একসময় বেরিয়ে যেত অফিস থেকে।
কারণ
আকালের পটভূমিকায় লেখা গল্পটিতে লেখক দেখিয়েছেন একটু খাবারের খোঁজে গ্রাম উজাড় করে মানুষ চলে এসেছে শহরে। অথচ লঙ্গরখানার সামনে ভিড় জমিয়ে আশাহত কেউ কেউ দুমুঠো খাদ্যের চাহিদায় ঘুরছে শহরের গলিঘুঁজিতে। ফুটপাথ জুড়ে অগণিত মানুষ মরেছে অনাহারে। এমনই এক অনাহারের মৃত্যু প্রত্যক্ষ করে আলোচ্য গল্পে নায়ক মৃত্যুঞ্জয়ের অন্তর্বয়ান ক্রমে বদলে যেতে থাকে। “… আমি বেঁচে থাকতে যে লোকটা না খেয়ে মরে গেল, এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কি?” মৃত্যুঞ্জয়ের এ হ্যালো আত্ম অনুশোচনা ক্রমে পরিণত হয়েছে তার আত্মযন্ত্রণায়। তাই নিজের ভালো থাকার চেয়ে দুর্ভিক্ষ পীড়িত, অসহায়, অন্নহীন মানুষগুলোর ভালো রাখার দায়িত্ব সে নিজেই নিতে চেয়েছিল। কি উপায় মৃত্যুঞ্জয় তাদের অবস্থার পরিবর্তন করবে এই ভাবনাই ক্রমশ নিজে বদলাতে লাগলো।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর
‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’গল্পটির প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ?
মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে মৃত্যুর প্রথম সাক্ষাৎ কখন হয়েছিল ?
অপিস যাবার পথে মৃত্যুঞ্জয় প্রথম কি দেখল ?
ছোট গল্প হিসেবে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’গল্পটির কতখানি সার্থক, আলোচনা করো ?
‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র আলোচনা করো ?
‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’গল্প অবলম্বনে মৃত্যুঞ্জয় স্ত্রী তথা টুনুর মা-এর চরিত্র আলোচনা করো ?
‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ছোট গল্প অবলম্বনে নিখিল চরিত্রটি পর্যালোচনা করা ?
‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’গল্পে লেখকের মানবদরদি মানসিকতা কিভাবে ফুটে উঠেছে, তা আলোচনা করো ?
“একটু অবজ্ঞার সঙ্গে ভালও বাসে” -কে , কাকে, কেন পছন্দ করত বা ভালোবাসত ?
“এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কি ?” -কোন অপরাধের কথা বলা হয়েছে ? বক্তা কেন নিজেকে অপরাধী মনে করেছেন?
“দরদের চেয়ে ছোঁয়াচে কিছু নেই এ জগতে” -কোন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে? এমন বলার কারণ কি?
“এভাবে দেশের লোককে বাঁচানো যায় না।” -কে, কেন এবং কিভাবে দেশের লোককে বাঁচাতে চায় ?
‘শহরের আদি অন্তহীন ফুটপাথ ধরে সে ঘুরে ঘুরে বেড়ায়।’ – ‘ঘুরে ঘুরে’ সে কি দেখে এবং কি উপলব্ধি করে?
“তার অভিজ্ঞতার কাছে কথার মারপ্যাঁচ অর্থহীন হয়ে গেছে।” -কারো অভিজ্ঞতা? এমন বলার কারণ কি