‘তাই’ ব্যবহারের কারণ
প্রকৃতিপ্রেমিক কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘অঙ্গুরি তোর হিরণ্য জল’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘আমি দেখি’ কবিতায় প্রশ্নোক্ত আবেদন রাখা হয়েছে। মানুষ সহ সকল জীব প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল। উদ্ভিদ প্রকৃতি হলো মানুষের প্রাণের স্পন্দন। অথচ মানুষ নির্মমভাবে উদ্ভিদ তথা প্রকৃতির উপর নিপীড়ন চালাচ্ছে। ফলে নাগরিক জীবনের বর্তমানে গ্রাস করেছে ক্লেদ-ক্লান্তি ও অবসাদ। চারপাশে নগর জীবন প্রাণহীন-রসহীন শুষ্ক। প্রকৃতির এই নির্মলতা, কোমলতাকে ফিরিয়ে আনতে কবি মানুষকে সচেতন হতে অনুরোধ করেছেন। এই কারণে সিদ্ধান্ত বাচক অব্যয় হিসেবে ‘তাই’ ব্যবহৃত হয়েছে উক্ত উদ্ধৃতিতে।
কবির আবেদন
পরিবেশ সচেতন কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় নির্বিচারে অরণ্য ধ্বংসের জন্য প্রবল ভাবে ব্যথিত। সভ্যতা ও প্রযুক্তি যত বিস্তৃত হচ্ছে ততো শ্যামল বাণীর ক্রমশ বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে বলে কবি আতঙ্কিত। মানুষ বোন কেটে বরষদ বানাচ্ছে বলেই হয়তো শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন-
“যাকে আজ বনভূমি বল তাকে জনভূমি বল কাল।”
নগরায়নের ফলে আমাদের বসুন্ধরা প্রতিনিয়ত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে, হারিয়ে যাচ্ছে ‘ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়’ এই কারণে কবি গাছগুলো তুলে এনে বাগানে বসানোর আবেদন জানিয়েছে। গাছের স্নিগ্ধ সান্নিধ্য আরোগ্যের জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়। আমাদের চোখ চায় সবুজ আর দেহ চাই সবুজ বাগান। শহরের অসুখ প্রত্যেকদিন গ্রাস করেছে সবুজাঞ্চল। কবির অরণ্যক মন তাই নাগরিক কোলাহল থেকে প্রকৃতির নিরাপদ আশ্রয় চলে যেতে চাই, প্রকৃতির সঙ্গে নিজের সত্তাকে জড়িয়ে রাখতে চান কবি। প্রাণীর সহায়ক উদ্ভিদ কে দূরে না রেখে কবি চোখের সামনে উদ্যানে রাখতে চেয়েছেন। এই ভাবনা থেকে কবি উক্ত কবিতায় এমন আবেদন জানিয়েছেন।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর