ভূমিকা
শুধুমাত্র আকার আয়তনে সংক্ষিপ্ত হলেই যে তা ছোটগল্প হবে এমন নয়। এক নিজস্ব সত্তা, রুপ ও রীতির বৈশিষ্ট্য সে উপন্যাস, বড় গল্প থেকে স্বতন্ত হয়ে ওঠে। ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’আলোচ্য পাঠ্যাংশটি সার্থক ছোটগল্প কি না তা আলোচনা সাপেক্ষে।।
আয়তনের স্বল্পতা
ছোট গল্পের প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য হল তার আয়তনের স্বল্পতা, বিষয়বস্তুর সংক্ষিপ্ততা। পঞ্চাশের মন্বন্তরের দুর্দশা গ্রস্থ মানুষের জীবন যন্ত্রণা কে লেখক গল্পের সংক্ষিপ্ত আকারে নিটোল বর্ণনায় উপস্থাপন করেছেন। লেখক এর আবেগ কোথাও মাত্রাতিরিক্ত হয়নি।
চরিত্র নির্মাণ
আলোচ্য গল্পের প্রধান চরিত্র মৃত্যুঞ্জয়। এই চরিত্রে সার্বিক প্রকাশের সহযোগী হয়েছে ‘নিখিল ও ‘টুনুর মা’চরিত্র দুটি। পাশাপাশি কাহিনীর প্রয়োজনে অনিবার্য হয়ে উঠেছে দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের শ্রেণি চরিত্র নির্মাণ। সুতরাং স্বল্প চরিত্র সৃষ্টের মাধ্যমে লেখক ছোট গল্পের বৈশিষ্ট্য কত ওপর শর্তকে মান্যতা দিয়েছেন।
কাহিনীর একমুখীনতা
কাহিনীর বাহুল্যবর্জিত একমুখীনতা ছোটগল্পের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। আকালের দিনে ‘আহারের মৃত্যু’-কে ঘিরে অনুভূতি প্রবন মৃত্যুঞ্জয়ের মধ্যে যে অন্তর্দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে তা লেখক সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছি।
ক্ষুদ্র তার মধ্যেও বৃহত্তর ব্যঞ্জনা
আলোচ্য গল্পটি আয়তনের ছোট হলেও বৃহত্তর ব্যঞ্জনা বহন করেছে। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুঞ্জয় মানসিক বিক্রান্তির মধ্যে দিয়ে যেমন প্রকৃত মনুষত্বের জয় ঘোষণা করেছেন লেখক, তেমনি মার্কসীয় দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাবে লিখে চরিত্রের মধ্যে দিয়ে প্রকাশ করেছেন আকলের ভয়ঙ্কর হতাশার মাঝে আশা বাদের কথা – যেন ‘বিন্দুতে সিন্ধু দর্শন’।
উপসংহার
আলোচ্য গল্পটির পাঠ্য শেষে অনুভবে পাঠকের অতৃপ্তি থেকে যায়। বলাবাহুল্য, ছোট গল্পের প্রায় সমস্ত বৈশিষ্ট্য কি ছুঁয়েছে আলোচ্য ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ গল্পটি। সমাজ সচেতন লেখক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় এই গল্পে ভাষার সংযত ও সচেতন ব্যবহার করেছেন। সনির্বাচিত ইঙ্গিতবহ শব্দ ব্যবহার, পর্যাপ্ত ভাবময়তা বিষয়ক উপযোগী বাচনভঙ্গি ও স্বতঃস্ফূর্ত বাক্যবিন্যাস আলোচ্য গল্পটিকে সার্থক ছোট গল্পের রূপ দিয়েছে।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর
‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’গল্পটির প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয় ?
মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে মৃত্যুর প্রথম সাক্ষাৎ কখন হয়েছিল ?
অপিস যাবার পথে মৃত্যুঞ্জয় প্রথম কি দেখল ?
ছোট গল্প হিসেবে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’গল্পটির কতখানি সার্থক, আলোচনা করো ?
‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্র আলোচনা করো ?
‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’গল্প অবলম্বনে মৃত্যুঞ্জয় স্ত্রী তথা টুনুর মা-এর চরিত্র আলোচনা করো ?
‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ছোট গল্প অবলম্বনে নিখিল চরিত্রটি পর্যালোচনা করা ?
‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’গল্পে লেখকের মানবদরদি মানসিকতা কিভাবে ফুটে উঠেছে, তা আলোচনা করো ?
“একটু অবজ্ঞার সঙ্গে ভালও বাসে” -কে , কাকে, কেন পছন্দ করত বা ভালোবাসত ?
“এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কি ?” -কোন অপরাধের কথা বলা হয়েছে ? বক্তা কেন নিজেকে অপরাধী মনে করেছেন?
“দরদের চেয়ে ছোঁয়াচে কিছু নেই এ জগতে” -কোন প্রসঙ্গে বলা হয়েছে? এমন বলার কারণ কি?
“এভাবে দেশের লোককে বাঁচানো যায় না।” -কে, কেন এবং কিভাবে দেশের লোককে বাঁচাতে চায় ?
‘শহরের আদি অন্তহীন ফুটপাথ ধরে সে ঘুরে ঘুরে বেড়ায়।’ – ‘ঘুরে ঘুরে’ সে কি দেখে এবং কি উপলব্ধি করে?
“তার অভিজ্ঞতার কাছে কথার মারপ্যাঁচ অর্থহীন হয়ে গেছে।” -কারো অভিজ্ঞতা? এমন বলার কারণ কি