“চোখ তো সবুজ চায় ! / দেহ চাই সবুজ বাগান”- চোখ কেন সবুজ চাইবে? দেহের সঙ্গে সবুজ বাগানের সম্পর্ক কি?

চোখের ‘সবুজ’ চাওয়া

প্রখ্যাত আধুনিক কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘অঙ্গুরী তোর হিরণ্য জল’ কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া ‘আমি দেখি’ কবিতাতে কবির গভীর পরিবেশন ভাবনা রূপায়িত হয়েছে। কবি অরণ্য প্রকৃতকে হৃদয় দিয়ে ভালবাসেন, এই প্রকৃতি কবির হৃদয়ে এক অনাবিল প্রশান্তি এনে দেয়। মানুষ যখন সভ্য হয়েছে। অর্থনৈতিক সচ্ছলতা বাড়ার কারণে গড়ে উঠেছে নিত্যনতুন অট্টালিকা, ফলস্বরূপ দেখা দিয়েছে ‘বন কেটে বসত’ আর অরণ্য নিধন। কবে চেয়েছেন সুস্থভাবে বাঁচার জন্য মানুষের বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে সচেতন হয়ে উঠুক। আধুনিক সভ্যতা থেকে সবুজের সমরহ আর প্রকৃতি নিবে স্পর্শ হারিয়ে যাচ্ছে। সবুজের স্নিগ্ধতায় ছোঁয়া শরীর ও মনের নির্মলতা, কমলতার পরশ এনে দেয়। তাই কবি মুমূর্ষ নাগরিকে পুনরুজ্জীবিত করতে সবুজের সান্নিধ্য চেয়েছেন।

দেশের সঙ্গে সবুজ বাগানের সম্পর্ক

নাগরিক জীবনের ক্লান্তিতে কবির মন বেদনাবিধুর। কবি জানেন শহরের প্রাণহীনতা, মৃত্যুর পান্ডুরতা থেকে সবুজে একমাত্র বাঁচিয়ে তুলতে পারে। তিনি শহরের প্রান্তে প্রান্তে ডাক পাঠিয়েছেন চির সবুজের। তিনি চেয়েছেন সবুজ তার দেহ, শিরা- উপশিরা, ধমনি, হৃদয়, মস্তিষ্কে উজ্জ্বল উপস্থিতি নিয়ে জেগে উঠুক। সবুজের স্পর্শে রোগাক্রান্ত সভ্য মানবজাতি আরোগ্য লাভ করবে। প্রকৃতিপ্রেমিক কবি অরণ্য প্রকৃতিকে বাঁচানোর জন্য আকুল হয়ে উঠেছেন। তাই তিনি সবুজের স্পর্শে উদগ্রীব হয়েছেন, গাছ এনে বাগানে বসাতে বলেছেন। কেবল কবির জন্য নয় ; সমগ্র শহরের জন্য, মানুষের সার্বিক সুস্থতার জন্য সবুজের একান্ত প্রয়োজন। কবি ভেবেছেন, সবুজের আগমন বাগানকে নতুন রূপে সাজিয়ে তুলবে, তেমনি মানব দেহ সবুজের স্পর্শ দূষিত-কলুষিতাকে নির্মল করবে।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment