দুর্যোগময় আবহাওয়া
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে দুর্যোগপূর্ণ বিরূপ পরিস্থিতির ছবি এঁকেছেন অকাল বর্ষণের প্রেক্ষাপটে। শীতে বর্ষা এমনিতেই অস্বস্তিকর, বৃষ্টি ঝরে তা লৌকিক ভাষায় হয়ে পড়ে কখনও ‘পৌষে বাদলা’, কখনো ও ‘ডাওর’ , কখনও ‘ফাঁপি’ । একেবারে এই বিরূপ পরিস্থিতিতে পৌষ মাসে যখন ‘ফাঁপি’এল, তখনো মানুষের ধান সব মাঠে পড়ে। ক্ষিপ্ত হয়ে উঠল মানুষের মন। জীবনের একটু উত্তাপ পাওয়ার জন্য গ্রামের মানুষ তখন এসে জড়ো হল চা দোকানে, জমাল ভিড় ও আড্ডা।
আড্ডার উদ্দেশ্য
এই আড্ডার পিছনে সবচেয়ে বড় যুক্তি হলো সময় কাটানো, ক্ষিপ্ত মেজাজ এর উপশম প্রচেষ্ঠা এবং শীতল মনকে শহরের আছে একটু সেঁকে নেওয়া। চলে তর্কবিতর্ক, যার কোন প্রসঙ্গ অপ্রসঙ্গ নেই। তাই -“সবাই চলে আসে সভ্যতার ছোট্ট উনুনের পাশে হাত-পা সেঁকে নিতে।”তখনকার সময়টিতে একটুকুইসুখী যথেষ্ট মূল্যবান।
আড্ডার স্বরপ
আড্ডা বা মজলিশ চা দোকানকে কেন্দ্র করে ভালো জমে ওঠে। বাজারে ছোট সীমার মধ্যে যে কয়টি চায়ের দোকান, গ্রাম গঞ্জ থেকে একে একে সেখানে লোকসমাগম হয়। কথার ভিড়ে আত্মপ্রকাশ করে বোম্বাইয়ের অভিনেতা অভিনেত্রী কিংবা গায়ক, কখনও ইন্দ্রাগান্ধী, আবার কখনো ও মুখ্যমন্ত্রী কিংবা এমএলএ। এক এক সময় আসে সারা বাউরির প্রসঙ্গ। কথা কাটাকাটি জের যত বাড়ে, চা ওয়ালার বিক্রিবাটাও তত বাড়ে। বাড়তে থাকে ধারকর্জর বহরও। চা ওলার পসার বাড়ে, সেভাবে-পৌষ মাস, ধানের মরসুম, ‘আজ না হোক, কাল পয়সা পাবেই’।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর