“ক্রন্দনরতা জননীর পাশে/এখন যদি না-থাকি” -‘এখন’ বলতে কোন সময়ের কথা বোঝানো হয়েছে? সেই সময় জননী ক্রন্দনরতা কেন?

‘এখন’ বলতে যে সময়কে বোঝানো হয়েছে

“ক্রন্দনরতা জননীর পাশে/এখন যদি না-থাকি” -এই উদ্ধৃতিটি নেয়া হয়েছে কবি মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতা থেকে। ‘এখন’ শব্দটির মধ্যে দিয়ে কবি কবিতা রচনা সময়কালটিকে বোঝাতে চেয়েছেন। যে সময় রাজনৈতিক হানাহানিতে সমাজে নেমে এসেছে গভীর অবক্ষয়, শাসকের চোখ রাঙ্গানিতে মানুষের মধ্যে থেকে মুছে গিয়েছে ভালোবাসা-সহানুভূতি-সম্প্রীতির বোধ, রাজনীতি পরিণত হয়েছে রমনীতিতে, রক্তাক্ত সমাজের প্রতিটি কোণ; ২০০৬-২০০৭ খ্রিস্টাব্দে সেই অবক্ষয়িত সমাজ-রাজনৈতিক পরিবেশ কবি অনুভব করেছেন জননী-জন্মভূমির কান্না। ‘এখন’ শব্দটির মধ্যে দিয়ে ভয়ংকর সেই সময়টিকেই বোঝানো হয়েছে।

জননীর কান্নার কারণ

‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতায় দেখা যায় সময়ের অভিজ্ঞাতে জননী-জন্মভূমি ক্রন্দনরতা। ‘নিহত ভাইয়ের শবদেহ দেখে’ দেশের মানুষ যখন অবিচল থাকতে বাধ্য হয়, রাজনৈতিক পরজীবীরা যখন কোন মেয়েকে টেনে নিয়ে যায় ঘর থেকে, আর সেই মেয়ের ছিন্ন ভিন্ন দেহ খুঁজে পাওয়া যায় জঙ্গলে ; তখন রাজনৈতিক সন্ত্রাসের ভয়ঙ্কর রূপ দেখে মানুষ নির্বাক হয়ে যায়। ভাগ্যের হাতে ভবিষ্যৎ সঁপে দিয়ে মানুষর প্রতিবাদীন হয়ে বসে থাকে। কবি লেখালেখি-গান গাওয়া কিংবা আঁকাআঁকি করার অর্থ খুঁজে পান না এই পরিস্থিতিতে। কবির কাছে এই অবক্ষয়িত পরিবেশে ভালোবাসা -সামাজিক মূল্যবোধ ইত্যাদি শব্দসমূহ অর্থহীন হয়ে দাঁড়ায়। যে মায়ের বুক থেকে ছেলেকে টেনে নিয়ে মেরে ফেলা হয়, মেয়েকে নিখোঁজ করে দেওয়ার পর আজীবনের মত-অনিবার্যভাবেই সে মায়ের চোখ জলে ভরে যায়।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment