কোন ধরনের রচনাকে উপন্যাস বলবে? কী কী বৈশিষ্ট্য থাকলে একটি লেখাকে উপন্যাস বলা হবে? প্রবন্ধের সঙ্গে উপন্যাসের পার্থক্য কোথায়?

যে ধরনের রচনাতে জীবন ও সমাজের বাস্তবচিত্র এবং চরিত্রের আঁতের কথা যুক্তি ও মনস্তত্ত্ব সহকারে রূপায়িত হয়, ঘটনা চরিত্র যুক্তি ও কার্যকারণ সূত্রে গ্রথিত হয় সেই রচনাকে উপন্যাস হিসাবে অভিহিত করা হয়।

উপন্যাস জীবন ও সমাজের দর্পন। এখানে ঘটনা ও চরিত্রের বিশ্বাস যােগ্যতাই বড় কথা। যদিও অতিপ্রাকৃতি বা ঐতিহাসিক ঘটনা উপন্যাস জগতে অচ্ছুত নয়। তবে এগুলিকে অবশ্যই চরিত্র বৈশিষ্ট্যের অংশ হয়ে উপন্যাসের অন্তর্গত হতে হবে।

বৈশিষ্ট্য: নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি থাকলে একটি লেখাকে উপন্যাস বলা যাবে-

  • যে লেখা মানব সমাজ ও জীবনের কথা বলে।
  • যা বাস্তব সম্মত রূপেই প্রকাশ পায়।
  • মাঝে মাঝে রােমান্স, রূপ কথা, স্বপ্ন বা কল্পরাজ্যের সন্ধান দিয়ে থাকে।
  • গদ্যে লিখিত হলেও অনেক ক্ষেত্রেই কাব্যিক সুর ধ্বনিত হয়।
  • প্রাত্যহিক সমাজ ও বাস্তব সত্য ও তথ্যের অনুসরণ যে রচনা।
  • নাচারালিজম, রিয়ালিজম, চৈতন্য প্রবাহ রীতি পেরিয়ে নানা আঙ্গিকে নতুন নতুন দিক উন্মােচিত করে চলেছে।

প্রবন্ধ ও উপন্যাসের মধ্যে পার্থক্য:

  • প্রবন্ধ শিল্পের স্বাভাবিক মাধ্যম গদ্য। উপন্যাস মানব সমাজ ও জীবনের কড়চা।
  • আয়তনের স্বল্পতাই প্রবন্ধের অন্যতম শর্ত। কিন্তু উপন্যাসের আয়তন ব্যাপক।
  • গদ্যে লিখিত হলেও উপন্যাসে অনেক ক্ষেত্রে কাব্যিক সুর ধ্বনিত হয়। কিন্তু প্রবন্ধে গদ্যে কাব্যিক সুর থাকে না।
  • উপন্যাস বাস্তব তা প্রাধান্য পায় কিন্তু প্রবন্ধে থাকে যুক্তির প্রাধান্য।
  • বিতর্কিত বিষয় সম্পর্কে পাঠককে মূল সিদ্ধান্তে উপনীত হতে সাহায্যে করে প্রবন্ধ, কিন্তু উপন্যাস বিতর্কিত বিষয় সম্পর্কে পাঠককে অবহিত করার এবং সিদ্ধান্ত নেবার ভাব থাকে পাঠকের হাতে।

অনার্স বাংলা দ্বিতীয় পত্রের সব প্রশ্ন উত্তর

Leave a Comment