কোঠারি কমিশন (১৯৬৪ থেকে ১৯৬৬) বর্তমানে বিজ্ঞান নির্ভর পরবর্তী সমাজের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য যে সকল লক্ষের ওপর গুরুত্ব অলৌড়ে কথা বলেছেন তা হল –
উৎপাদনমুখী শিক্ষা
শিখাকে জাতীয় উপাদান মুখী করতে হবে। সম্পূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থা যাতে সচল থাকতে পারে এবং শিক্ষা যাতে জাতীয় সম্পদ বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে তার জন্য বিজ্ঞানসম্মত সমস্ত রকমের জ্ঞান এবং কর্ম প্রশিক্ষণ দেওয়াই হবে শিক্ষা লক্ষ্য।
জাতীয় সংহতিবোধ জাগরন
কমিশন বলেছেন, ভারতের শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য হবে জাতীয় সংহতি ভাব জাগ্রত করা। নাগরিকদের মনে জাতীয় চেতনা ও ঐক্যের মনোভাব জাগরণের মাধ্যমে জাতীয় সংহতিবোধ গড়ে তোলা সম্ভব।
চারিত্রিক বিকাশ
শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক সহায়তা করাকেও শিক্ষার লক্ষ্য হিসাবে ধরা হয়েছে। গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় ভালোভাবে বসবাস করতে গেলে প্রত্যেকেরই ব্যক্তিগত কিছু গুণের অধিকারী হওয়া একান্ত বাঞ্ছনীয়। শৃঙ্খলা বোধ ইত্যাদি মতো চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গুলির বিকাশ ঘটানো শিক্ষার লক্ষ্য।
প্রকাশভঙ্গির বিকাশ হোক সংযোগ স্থাপন
ভারতীয় শিক্ষার একটি লক্ষ্য হবে ভারতীয়দের প্রকাশভঙ্গির বিকাশ সাধনের এবং পারস্পারিক সংস্থাপনের ক্ষমতা বিকাশ সাধনের সহায়তা করা।
সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগরণ
কমিশন বলেছেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মনে জাতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত করতে হবে। এই শিক্ষা শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাতীয় চেতনা ভোট জাগ্রত করবে।
আধুনিকীকরণের প্রশিক্ষণ
কমিশন বলেছেন, বর্তমানে জ্ঞানের প্রসার দ্রুতগতিতে ঘটেছে। তেমনি দ্রুত সামাজিক পরিবর্তন ঘটেছে। কারণ জ্ঞান ও সামাজিক ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের জন্য প্রত্যেক নাগরিককে শিক্ষিত হয়ে উঠতে হবে। , তাই আধুনিক সমাজের উপযোগী হয়ে গড়ে উঠতে পারে এবং ভারতের সমাজের আধুনিকীকরণের সাহায্য করতে পারে, সেই উপযোগী প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা করাই হবে শিক্ষার লক্ষ্য।
ভাষার বিকাশ
কমিশনের মতে, ভাষার বিকাশের মধ্যে দিয়েই মানুষ তার মনের ভাবকে দ্রুত অন্যের কাছে পৌঁছে দিতে পারে। তাই প্রতিটি মানুষের মধ্যে ভাষার বিকাশ সাধন করা শিক্ষার একটি বৃহৎ লক্ষ্য।
শিক্ষায় সমসুযোগ
সমাজের সকল মানুষ যাতে শিক্ষায় সুযোগ সুবিধা লাভ করতে পারে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। অর্থাৎ, গণতান্ত্রিক নীতি দ্বারা পরিচালিত হয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে গড়ে তুলতে হবে।
জাতীয় শিক্ষা পরিকল্পনা রচনা
কমিশনের মতে, শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য হলো ভারতীয় শিক্ষার একটি জাতীয় পরিকল্পনা রচনা।
নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ জাগরণ
কমিশনের মতে, শিশুর মধ্যে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ জাগ্রত করায় শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য।
গণতান্ত্রিক চেতনার বিকাশ
কমিশনের মতে, জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার লক্ষ্য হবে শিক্ষার্থীদের মনে গণতান্ত্রিক সময় ব্যবস্থা প্রতি আস্থার ভাব জাগ্রত করা।
সুতরাং শিক্ষা কমিশন (১৯৬৪ থেকে ১৯৬৬) কর্তিক্য নির্ধারিত শিক্ষার উদ্দেশ্য গুলি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় শিক্ষার ব্যবহারিক দিকের ওপর গুরুত্ব আলো করা হয়েছে।
শিক্ষার লক্ষ্য হবে এমন নাগরিক সৃষ্টি করার যে অনুগত্য, বিশ্বাস ও আশা-আকাঙ্ক্ষা, ভারতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে অবলম্বন করে গড়ে উঠে যাতে সে ভারতীয় সমাজকে, ভারতীয় চিন্তাধারাকে আধুনিকতার পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে