“কেন তবে লেখা, কেন গান গাওয়া/ কেন তবে আঁকাআঁকি?” -কবির মধ্যে কেন এই প্রশ্ন অনিবার্য হয়ে উঠেছে?

ভূমিকা

‘ধানক্ষেত থেকে’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতাটিতে কবি মৃদুল দাশগুপ্তের সমাজ সচেতনতার পরিচয় পাওয়া যায়। শিল্প সৃষ্টির অন্যতম শর্ত শিল্পের সমাজ মানসিকতার প্রতিফলন ঘটানো। তাই একজন সংবেদনশীল কবি, নায়ক কিংবা চিত্রকর সৃষ্টির মধ্যে সমাজ সত্যের প্রকাশ ঘটান। আলোচ্য কবিতায় জন্মভূমির চরম দুর্দশা দিনে কবি আত্মিকভাবে তার পাশে থেকে শিল্পের সেই শর্তকেই মান্যতা দিয়েছে। নিহত ভাইয়ের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে কবির মনে দানা বাঁধে ক্রোধ যা খুবই স্বাভাবিক। মনুষত্বহীন সমাজ বিরোধীদের দ্বারা যখন ঘরের মেয়েটি লাঞ্ছিত হয়, তাকে ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পাওয়া যায় জঙ্গলে তখন কবিতা একমাত্র মাধ্যম হয়ে ওঠে কবির বিবেকের কাছে, তিনি প্রতিবাদে গর্জে উঠতে চান। সন্তানের উপরে এই নির্মম অত্যাচার দেশ দেশ জননীকে করে তোলে ক্রন্দনরতা। কবিতার মাধ্যমে প্রতিবাদ হেনে তাই কবি পাশে থাকতে চান ক্রন্দনরতা জননীর।

কবির প্রশ্ন

কবির বিবেক-মূল্যবোধ সমাজের চরম অবক্ষয়ও অক্ষত থাকতে বলে, তিনি অনুভব করেন শিল্পী যাবতীয় সংবেদন ধরা থাকবে তার সৃষ্টিতে। তাই মৃদুল দাশগুপ্তের মনে এই প্রশ্ন অনিবার্য হয়ে উঠেছে- ‘কেন তবে লেখা, কেন গান গাওয়া/কেন তবে আঁকা আঁকি?’ কবির আশ্বাস কবিতায় জমিয়ে রাখা প্রতিবাদের বারুদ একদিন বিস্ফোরণ ঘটাবেই। আলোচ্য কবিতার কবি কাব্যিক প্রতিবাদ গড়ে তুলে মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকারই অঙ্গীকার করেছেন।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment