হাতি-বেগার
সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের রিপোর্টাজধর্মী রচনায় ‘আমার বাংলা’র ‘গারো পাহাড়ের নিচে’ শিরোনামাঙ্কিত অংশে আমরা ‘হাতি-বেগার’ প্রসঙ্গটি পায়। ময়মনসিংহ -র গারো পাহাড় অঞ্চলে প্রাচীনকালে প্রচলিত এক দমনমূলক জমিদারি আইনের নাম হাতি বেগার। তৎকালীন জমিদারের ছিল হাতি ধরার শখ। তার জন্য পাহাড়ের মাচা বাধা হতো। মাচার উপর সেপাইসান্ত্র নিয়ে নিরাপদে, নিরিবিলিতে বসতেন জমিদার। সেই সঙ্গে পান থেকে চুর না খসে যাওয়ার ঢালও ব্যবস্থা। এইসব মেটাবার এক ভয়ানক নিয়ম তৈরি হলো। প্রত্যেক গ্রাম থেকে চাল, চিরে বেঁধে প্রজাদের আসতে হত। যে জঙ্গলে হাতি আছে সেখানে তাদের বেড় দিয়ে দাঁড়াতে হতো। ছেলে বুড়ো কারও ছাড় নেই। হাতি বের দিতে গিয়ে কেউ সাপের কামড়ে, কেউবা বাঘের কামড়ে প্রাণ দিত। কিন্তু এ নিয়ম মানা ছাড়া কোন গতি ছিল না। এই আইনের নাম ছিল হাতি বেগার।
হাতি বেগার চললো না কেন
প্রজন্মের পর প্রজন্ম এ অন্যায় সহ্য করতে না পেরে একদিন প্রজাদের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে, তাদের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে গ্রাম গ্রামান্তরে। বিদ্রোহী প্রজাদের নেতৃত্ব দেন গোরাচাঁদ মাস্টার। চাকলায় চাকলায় মিটিং বসে, কামার শালা তৈরি হতে থাকে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র। লড়াই বাঁধে, জমিদারের পল্টন যুদ্ধে অপটু চাষিদের পরাজিত করে। কিন্তু এ বিদ্রোহের পরিমাণ এর চিরতরে বন্ধ হয়ে যায় হাতিবেগার।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর