প্রথম স্বদেশী সার্কাস
কলকাতায় বাঙালির প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা প্রথম স্বদেশী সার্কাসের নাম ন্যাশনাল সার্কাস। ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এই সার্কাস নবগোপাল মিত্রের নিরসল প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠে।
বাঙালির অবদান
উনিশ শতকের শেষভাগে নবগোপাল মিত্রের ব্যবস্থাপনায় গড়ে উঠলেন হিন্দুমেলা, ব্যায়ামশাল, যা বাঙালির শরীরচর্চার বিকাশে অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠে, একই সঙ্গে তার স্বজাতির মধ্যে ঐক্য বন্ধন সুদৃঢ় করতে সক্ষম। আর এই শরীরচর্চায় বিকাশের মাধ্যমেই নিহিত ছিল বাঙালির সার্কাসের স্বপ্ন। এর সঙ্গে কলকাতার আগত ইউরোপীয় সার্কাস বাঙালি মনে সার্কাস সম্পর্কে উৎসাহ সঞ্চালন করেছিল। নবগোপাল মিত্রের ন্যাশনাল সার্কাস ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে কিন্তু বেশিদিন চলেনি। ভগ্নপ্রায় ‘ন্যাশনাল সার্কাস’ ও ‘গ্রেট ইন্ডিয়ান সার্কাস’ এর পথ্য ও অন্যান্য সাজ সরঞ্জাম কিনে নিয়ে প্রিয়নাথ বসুর পরবর্তী কালে গড়ে তোলেন ‘গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস’, যা বাংলা ছাড়িয়ে সমগ্র ভারতে পক্ষ বিস্তার করে।
রেওয়ার মহারাজা এই সার্কাস দেখে খুশি হয়ে ‘লক্ষ্মী’ ও ‘নারায়ণ’ নামে দুটি বাঘ উপহার দেন। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ওঠা এই সার্কাস দেখতে আসতেন সেকালের প্রখ্যাত ব্যক্তিবর্গ। বাদল চাঁদ বাঘের খেলার জনপ্রিয় শিল্পী ছিলেন। সুশীলা সুন্দরী বাংলার প্রথম নারী, যিনি অকুতোভয়ে বাঘের খাঁচায় প্রবেশ করে খেলা দেখাতেন। এছাড়াও ছিলেন মৃন্ময়ী। এরা উভয়ই পশু খেলার নামই শিল্পী ছিলেন। জিমন্যাস্টিকের তৎকালীন সেরা খেলোয়াড় ছিলেন কুমুদিনী। সেকালের সার্কাস ও শরীরচর্চায় কোচকে প্রফেসর বলা হত। প্রিয়নাথ ও এই নাম পান। প্রিয়নাথের সার্কাস জীবনের অভিজ্ঞতার বিস্তৃত কাহিনী তার বিখ্যাত গ্রন্থে প্রফেসর গোঁফের অপূর্ব ক্রমন বৃত্তান্ত। বিশ্বময় তার সার্কাস এর পরিচিতি ঘটে। পরে তার পুত্র শিল্পী অবনীন্দ্রকৃষ্ণ বসু ১৩৪৩ বঙ্গাব্দে বারবার কীর্তি নিয়ে লেখেন বাঙালির সার্কাস।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর