“কতক্ষণ সে এই মারমুখী জনতাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারতো কে জানে” -‘সে’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? জনতা মারমুখি হয়ে উঠেছিল কেন?

‘সে’ -এর পরিচয়

‘সে’ বলতে এখানে প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের আইন রক্ষক নীল উর্দিপড়া, লাঠিধারী চৌকিদারের কথা বলা হয়েছে।

জনতার মারমুখি হয়ে ওঠার কারণ

দুরন্ত শীতে অকাল দুর্যোগে বটগাছের কর্দমাক্ত খোঁদলে বুড়িকে নিঃসাড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখে গ্রামবাসীদের মনে হয়েছিল সে মারা গিয়েছে। হিন্দুরা তাকে নদীর চড়ায় ফেলে এসেছিল। মুসলমান তাকে আবার বাজারে ফিরিয়ে এনেছিল। এই নিয়ে তর্কাতর্কি, বাগবিতন্ডা। প্রত্যেক সম্প্রদায়‌ই মনগড়া কিছু কথা সাজিয়ে স্বপক্ষে যুক্তি খাড়া করে। গায়ের মোল্লা সাহেবের নেতৃত্বে মুসলমানরা দাবি তোলে, বুড়ি মারার সময় ‘আল্লা’ বা ‘বিসমিল্লা’ বলেছেন, মোল্লাজি নিজের কানে বুড়িকে স্পষ্ট কমলা (মুসলমান ধর্মের মূল বাক্য) পড়তে শুনেছেন। গাঁয়ের ভটচাজমশাই নেতৃত্বে হিন্দুদের দাবি, বুড়ি তাদের লোক। বুড়িকে স্পষ্ট বলতে শুনেছেন-‘শ্রী হরি শ্রী হরি শ্রী হরি’ । তথ্য প্রমাণের চাপানউত্তর, কোথা কাটাকাটি একসময় পৌঁছে যায় বাঁশের চ্যাংদোলা টানাটানিতে। তা থেকে শুরু হয় মারামারি। দেখা যায় পিচের উপর ভরি দে ওকে মাঝখানে রেখে এক সময় মারাত্মক সব অস্ত্রশস্ত্র হাতে নিয়ে দু পক্ষই যোদ্ধার মূর্তিতে মারমুখী। দুই পক্ষই গালিগালাজ করছে। মোল্লা সাহেব ‘আল্লাহু আকবার’ বলে চেঁচালে, ভটচাজমশাই ও ‘জয় মা কালী! যবন নিধনে অবতীর্ণ হও মা!’ বলে চেঁচাচ্ছেন। জনতা মারমুখী হয়ে উঠেছে বুড়ি দেহ দখল নিতে।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment