ঔপনিবেশিক বাংলার আধুনিক বিজ্ঞানচর্চা সূত্রপাতের এশিয়াটিকে সোসাইটির অবদান কতখানি, তা বিশ্লেষণ করে বুঝিয়ে দাও ?

ঔপনিবেশিক বাংলায় ধীরে ধীরে যেভাবে জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চা শুরু হয়েছিল, সে ক্ষেত্রে এশিয়াটিকে সোসাইটির ভূমিকার কথা অনস্বীকার্য। ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে ১৫ জানুয়ারি কলকাতায় স্থাপিত এই প্রতিষ্ঠানটির প্রাচ্যের জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে বিশ্বের দ্বিতীয় প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠান হিসেবে গৌরবন্বিত।

অবদান

এই প্রতিষ্ঠানের প্রাণপুরুষ উইলিয়াম জোন্স ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি হিসেবে কলকাতায় আসেন এবং মূলত তার ওই উদ্যোগে এবং তৎকালীন বড়লাট ওয়ারেন হোস্টিংসের পৃষ্ঠপোষক পাতায় এশিয়াটিকে সোসাইটির সৃষ্টি হয়। এই সোসাইটি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল এসইও খন্ডের মানুষ এবং প্রকৃতি সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়ে যেমন ইতিহাস, পুরা তত্ত্ব, শিল্পকলা, সাহিত্য ও বিবিধ বিজ্ঞান বিষয়ক আলোচনা, গবেষণা ও বিশ্লেষণ করা। এজন্য বউ সামগ্রিক, নথি ও বিবিধ উপাদান এই সোসাইটির সূত্রে সংগৃহীত ও সংরক্ষিত হয়।

এশিয়াটিকে সোসাইটির জন্য ভূতত্ত্ব, নঋতত্ত্ব, বিভিন্ন মুদ্রা ও ঐতিহাসিক সামগ্রিক, উদ্ভিদবিদ্যা প্রভৃতি যে বিপুল নমুনা সংগৃহীত হয়েছিল ; বর্তমান ভারতীয় জাদুঘর গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সেগুলি উল্লেখযোগ্য অবদান আছে। হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, রাজেন্দ্রলাল মিত্রের মতো মনীষীরা ছিলেন এই সোসাইটির প্রধান পুরুষ। একই সঙ্গে এইসব নমুনার বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা মানব সভ্যতা বা প্রাচ্য সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিবর্তনে বিশ্লেষণমূলক পরিচয় দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিরাট সহায়তা করেছেন। বলা বাহুল্য, অম্লান মহিমায় ভাস্বর এশিয়াটিকে সোসাইটির প্রথম ভারতীয় সভাপতি ছিলেন রাজা রাজেন্দ্রনাথ মিত্র। প্রাচ্য ও প্রাশ্চাত্যের বিশিষ্ট গুণ জ্ঞানী মানুষদের প্রেরণা ও সহযোগিতায় গড়ে ওঠা এই প্রতিষ্ঠান বাংলার বুকে জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাস অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে এই ঔপনিবেশিক পর্ব থেকে আজ পর্যন্ত।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment