‘কাবুকি’ থিয়েটারের প্রতি কদর
প্রখ্যাত নাট্যকার ও নাট্য ব্যক্তিত্ব শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটকের সূচনা স্বয়ং শম্ভু মিত্রের একটি দীর্ঘ সংলাপ রয়েছে। যেখানে নাট্যমঞ্চ, বাংলা নাট্য প্রয়োগের বৈচিত্রহীনতা, দৈন্যের ভাড়ে বাংলা নাটকের নানা সমস্যা কথা অত্যন্ত সংবেদনশীলতার সঙ্গে উচ্চারিত হয়েছে। নাট্যকার তার সংবেদী ভাষায় মঞ্চে নাট্য উপকরণের সহজ সরল উপস্থাপনার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি উদাহরণ দেখিয়েছেন- উড়ে দেশের এক রাজার দূতকে বললেন- “তুমি ঘোড়া নেইকরি চঞ্চল খবর নেই আসবি।” অমনি দূত ঘোড়ায় চড়ার ভঙ্গি পরে বেরিয়ে গেল। একটু পরে ওই একই ভঙ্গিতে ফিরে এলো।
সবাই ব্যাপারটা বুঝলো। নাট্যকারের বক্তব্য এই প্রয়োগ কৌশল আমাদের দেশে শিক্ষিত ইংরেজি জানা দর্শক নেবে না। অথচ এতে মঞ্চ নির্মাণের খরচ কম। নাট্যকার রুশ ও চিত্র পরিচালক আইজেনস্টাইন জাপানের কাবুকি থিয়েটার প্রসঙ্গে একই ব্যাপারের প্রতি গুরুত্ব আরোপণের কথা করেছিলেন। যেহেতু সাদা চামড়ার কোন মানুষ একে গুরুত্ব দিয়েছেন, তাই এখন ইংরেজি শিক্ষিত দেশীয় মানুষ একে গুরুত্ব দেবে বলে নাট্যকার মনে করেছেন।
নাট্যকারের মনোভাব
আমাদের দেশের ইংরেজি শিক্ষিত মানুষদের প্রতি নাট্যকারের ধারণাটি খুবই ইতিবাচক নয়। এই ধরনের মানুষরা দেশীয় সাহিত্য-শিল্প-সংস্কৃতিকে ইউরোপীয় ধারণাই বোঝার চেষ্টা করেন। তাই নাট্যকারের বিদ্রুপ টি এদের উপর সম্য বর্ষিত হতে দেখা যায়। এই ব্যঙ্গ প্রয়োগেই তিনি বলেন-“মনে হল লোক মানবে না। এ শহরের সব কত ইংরেজি জানা লোক, তারা ফি-হপ্তায় বিলিতি বায়োস্কোপ দ্যাখে, আর প্যান্টুলুন করে ইংরেজি বলে। তারা এসব মানবে কেন? তবে হ্যাঁ, মানতে পারে, যদি সাহেবে মানে। যেমন রবিঠাকুরকে মেনেছিল।” বলা বা হল রবীন্দ্রনাথের প্রসঙ্গ জানো এক্ষেত্রে ইংরেজি বলা দেশীয় মানুষের গালে সাপাটে চড় মারার সমান।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর