“এটা অন্য রকমের লভ সিন ; প্রগ্রেসিভ লভ সিন।”- প্রগ্রেসিভ লভ সিনটির বর্ণনা দিয়ে তা প্রগ্রেসিভ কেন বুঝিয়ে দাও?

প্রগ্রেসিভ লভ সিন

অসামান্য নাট্যকার, অভিনেতা, নির্দেশক শম্ভু মিত্রের ‘বিভাব’ নাটক থেকে উক্তিটি গৃহীত। প্রথম প্রেমে দৃশ্যটি হাস্যরস সৃষ্টিতে ব্যর্থ হওয়ায় দ্বিতীয় প্রেমের দৃশ্যের পরিকল্পনা করেন বৌদি যেটি ছিল ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’ । যেখানে অপরিহার্য নায়ক নায়িকার সঙ্গে প্রয়োজন পুলিশের। বৌদির প্রস্তাবে অমর পুলিশের ভূমিকায় অভিনয় সম্মত হয়। নাটকের মধ্যে এই নাট্য দৃশ্যের হঠাৎই কল্পিত জানালা দিয়ে নায়িকা বৌদি দৌড়ে শম্ভু মিত্র কে পালিয়ে যেতে বলেন। কারণ তিনি একজন আত্মগোপনকারী রাজনৈতিক দলের নেতা। এই ভূমিকায় অভিনয়ে তীব্র আপত্তি জানান সমভূ মিত্র।

অমর‌ও ভয় পেয়ে যায়। কেউ সত্যি বলে ভাবলে তাদের হেনস্থা হবে, ‘বহুরূপী’ ও সংকটে পড়বে। কিন্তু রাজনৈতিক সংশ্রবণ না থাকলে নাটক প্রগতিশীল হবে না, বৌদির এই উক্তিতে তারা অভিনয় রাজি হয়। এরপর পুলিশের ভয়ে জানালা দিয়ে লাফিয়ে পালাতে যায় শম্ভু। যাওয়ার আগে বার্নার্ড শ-এর ‘ক্যান্ডিডা’ নাটকের এবং তুলসী লাহিরির ‘পথিক’ নাটকের নায়কের মুখে দুটি আবেগ ঘন উক্তি বলে যান। কিন্তু পালাতে গিয়ে পুলিশরূপী অমর এর কাছে ধরা পড়ে যান। এই নাট্য পরিকল্পনাটি ও হাসির উদ্বেগ হয় না কার‌ও মনে। তাই এই প্লেটটি ও বর্জিত হয়।

প্রগ্রেসিভ হতাশার কারণ

এই ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’ কথাটির মধ্যে বিদ্রুপের আভাস স্পষ্ট। রাজনৈতিক তাৎপর্য না থাকলে বাঙালি সমাজে কোন বিষয়কে প্রগতিশীল ভাবতে পারে না। ‘প্রগতিশীল’ মানে কোন বিশেষ মত বা আদর্শকে ধারণ করা-এ কথার শম্ভু মিত্র মানতেন না। তাই এই নাট্য দৃশ্যটিকে বিদ্রুপ বিদ্ধ করেই ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’ বলা হয়েছে।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment