“আমি রোজ লুকিয়ে লুকিয়ে গ্রীন রুমে ঘুমায় চাটুজ্জেমশাই- কেউ জানে না”- কোন নাটকের অংশ? বক্তাকে? তিনি কেন গ্রীন রুমে ঘুমান?

উৎস

প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটির প্রসিদ্ধ নট, নির্দেশক অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নানা রঙের দিন’ (রুশ সাহিত্যিক আন্তন চেকভের ‘সোয়ান সঙ’ নাটিকার অনুপ্রেরণায় রচিত) একাঙ্কিকার অন্তর্গত।

বক্তা

নাট্য দলের পুরনো নিষ্ঠাবান সদস্য ৬০ বছর বয়সী প্রোমোটার কালিনাতসেন এই মন্তব্য করেছেন।

ঘুমোনোর কারণ

কালীনাথ নাটকের দলের নেপথ্যকর্মী। তার সঙ্গে এ দলের যোগ দীর্ঘদিনের। অভিনয়কে সাফল্যমণ্ডিত করে তোলার অদৃশ্য কারিগর তিনি, পেশাগত ভাবে ‘প্রোমোটার’ । উইংয়ের আড়াল থেকে অভিনেতা অভিনেত্রীদের মুখের কথা যোগানোই তার কাজ। কর্মে নিষ্ঠাবান কালীনাথ সুদীর্ঘ সময় ধরে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে আসছেন। নাটকের পার্শ্ব চরিত্র কালীননাথ রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায় এর চরিত্রকে পূর্ণতা দানের জন্য এবং নাট্য দ্বন্দ্বকে প্রকাশ করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তার ঐ মাঝে অতি সামান্য পরিসরের তার ব্যক্তিজীবনের ছিন্ন চিত্রটি উদ্ভাসিত হয়েছে।

মঞ্চের বাইরে বা মঞ্চের নেপথ্যে অন্ধকারে থাকা নাট্যকর্মীদের মতো কালীনাদের জীবনে অন্ধকারচ্ছন্ন। এ নাটকে তিনি তার মতো অজস্র বঞ্চিত, অবহেলিত, অর্ধাহারি, দুর্দশা গ্রস্ত নাট্যকর্মীদের প্রতিনিধি। সামান্য মাইনেতে যার বেঁচে থাকার টিকে থাকায় রূপান্তরিত। কেবল শিল্প প্রাণতায় তাকে এ পেশায় নিরবচ্ছিন্ন রেখেছে। রাতের শোবার স্থান নেই। জোগাড় করা সামর্থ্যও নেই। তাই তিনি রোজ রাতে লুকিয়ে লুকিয়ে গ্রিন রুমে ঘুমান। সুদীর্ঘ কাল নাট্য দলের সঙ্গী, নিরসল কর্ম কোন কিছুই তার জীবনে নিরাপত্তা দিতে পারেনি। তাই রজনীকান্ত কি তার কাতর অনুরোধ বা আর্তি- “…. আপনার পায়ে ধরছি, এ কথাটা মালিকের কানে তুলবে চাটুজ্জে মশাই, আমার শোয়ার জায়গা নেই এক্কেবারে বিঘোরে মারা পড়বো তাহলে-” এই অসহায় তাই তাকে ‘লুকিয়ে ঘুমোতে’ বাধ্য করে।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment