ভূমিকা
কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ তার ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে যে বক্তব্যকে উপস্থাপিত করতে চেয়েছেন তা হল, চিরন্তন ভারতবর্ষের আবহমান রূপের সততা। ভারত তার প্রবাহমান অস্তিত্বের বহু কিছু ধারণ পড়ে আছে, যার একটি হলো বহু জাতিসত্তার এক অভিন্ন সুর অর্থাৎ একতা। যাতে ভারতবর্ষের সার্বভৌম সত্তায় এনেছে বহু মাত্রিকতার ছাপ।
মূল বক্তব্য
কিন্তু সাম্রাজ্যবাদী শক্তির শেষ দাম্ভিক উপাসক ইংরেজরা তাদের ভেদনীতিকে প্ররোচিত করতে হিন্দু মুসলমান বিভেদের যে বীজ এ দেশের মাটিতে পুঁতে দিয়েছিলেন, তার শিকরের শিকরে বহু বিন্যস্ত হয়েছিল, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। তাই এখনো তুচ্ছাতিতুচ্ছ কারণে এই বিষবাষ্প মানুষের মনে ছায়া ফেলে সাম্প্রদায়িকতার আকাশকে ঘন মেঘ আচ্ছন্ন করে দেয়।
অন্তর্দৃষ্টির উন্মোচন
‘ভারতবর্ষ’ গল্পের প্রেক্ষাপটে লেখক এই সামাজিক সত্তাকে স্পষ্ট করতে গল্পের কাহিনীকে এমন ভাবে বিন্যস্ত করেছেন, যাতে একটি থুত্থুড়ে বৃদ্ধা চরিত্র জোরালো হয়ে ওঠে। বুড়িকে মৃত কল্পনা করে, রাস্তার উপর তার মৃতদেহ শুইয়ে বী বতমান দুই পক্ষ হিন্দু মুসলমানের লড়াইয়ে চরমে উঠলে, লেখক বুড়িকে জীবন্ত দেখান। সবাই বিস্মিত, যেন সমগ্র ভারতে বিস্ময়ে হতবাক। কেউ একজন এই নবজাগত বুড়ি কে জিজ্ঞাসা করে বসে- ‘বুড়ি, তুমি হিন্দু না মুসলমান?’ মনে হয় সমগ্র ভারতবর্ষের বর্তমান আত্মজিজ্ঞাসা এটি। এখানে লেখক উক্ত বাক্যাংশের সার্থক প্রয়োগ করেছেন, যা বর্তমানে ভারতের অন্তর্দৃষ্টি উন্মোচন ঘটায় যেন। লেখক মূল ভাবনা প্রকাশ পায়-হিন্দু নয়, মুসলমান নয়, মানবতাই হোক মানবজাতির একমাত্র পরিচয়।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর