‘আমি’ কবিতা অবলম্বনে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবি-প্রতিভার যে পরিচয় পাওয়া যায় তা মূল্যায়ন করো?

ভূমিকা

‘আমি দেখি’ কবিতাটির সহজ কথা সহজে বলার বাচনিক ভঙ্গিতে উজ্জ্বল। নগর কেন্দ্রিক জীবন মানুষের মধ্যে গড়ে তুলেছে ভয়াবহ ব্যাধি, সেই ব্যাধির হাত থেকে মুক্তির হদিশ‌ই হলো এই কবিতার মূল বিষয়বস্তু। শক্তি চট্টোপাধ্যায় স্পষ্ট বক্তা ; তার কাব্যিক প্রতিবাদ তাই ধ্বনিত হয়েছে উদাত্ত উদ্ধত কন্ঠে।

শব্দ ব্যবহার

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতার শব্দ ব্যবহার সম্পর্কে বলেছিলেন- “শক্তি যেভাবে কবিতায় শব্দ ব্যবহার করে, সেরকমভাবে আর কেউ পারেনা। … শক্তিকে বলা উচিত শব্দের প্রভু।” শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কাব্যগ্রন্থ গুলি শাব্দিক বৈচিত্র্যে ভরপুর। বহুল প্রচলিত, শব্দ দিয়ে কবি ‘আমি দেখি’ কবিতাটি লিখেছেন। তবু শব্দ, শব্দগুচ্ছ অথবা ধবন এর পুনরুক্তির মাধ্যমে উচ্চারণের বাড়তি ঝোঁক সৃষ্টি করেছে কবি আলোচ্য কবিতাটিতে। তাতে তার কবিতার আত্মকথনরীতি হয়ে উঠেছে আরও সত্য এবং যথার্থ। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে-কবিতার প্রথম প‌ঙক্তিত ‘গাছগুলো তুলে আনো’ আর শেষ স্তম্ভকের এর সূচনায় পুনরায় ‘গাছ তুলে আন’ কিংবা ‘বাগানে বসাও’ -দ্বিমাত্রিক শব্দের দুবার ভিন্ন জায়গায় উচ্চারণ।

ছন্দ রীতি

কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতার ছন্দরীতি সম্পর্কে বলেছেন- “ছন্দে লেখা কবিতার ক্ষেত্রে অনিবার্য। আর যে শুরু করবে, সে যেন ছন্দে শুরু করে। তারপর ছন্দ ভেঙে গদ্যে আসতে পারে।” কবি ও ছন্দে পদ্ম ভেঙে গদ্যে এসেছেন, গদ্যের সার্দিক প্রয়োগে পদ্মের সাধ এনেছেন।

গঠন

ষোলো লাইনের কবিতা প্রথম যতিচিহ্ন পড়েছে তোরোতম লাইনে। অন্ত্যমিলিবর্জিত হলেও কবিতার প্যাটারনে কোথাও শিথিলতা নেই। এইভাবে সহজতায়, সরল শব্দ প্রয়োগে নিজের বক্তব্যকে দৃঢ়ভাবে প্রকাশের কাব্যিক শক্তির নাম শক্তি চট্টোপাধ্যায়।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment