“আমিও তো মানুষ কালিনাথ।” -উক্তিটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করো? বক্তার এই প্রসঙ্গ মন্তব্যের কারণ কি?

প্রসঙ্গ

“অজিতেশ বন্দোপাধ্যায় রচিত ‘নানা রঙের দিন’ শীর্ষক একাঙ্ক নাটকের মুখ্য চরিত্র বর্ষীয়ান অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের প্রোমোটার কালিনাথ সেনের উদ্দেশে প্রশ্নোদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন। রজনীকান্ত জানেন দর্শকরা তাকে ভালবাসলেও তাদের ভালোবাসা কেবল থিয়েটারের চার দেওয়ালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, অন্যদিকে বাড়িতে ও রজনীকান্তে নিজের কেউ নেই। তার একাকিত্বের যন্ত্রণা নিয়ে, স্বনামধন্য অভিনেতার ব্যক্তিজী জীবন নিয়ে আর সকলের মত কালিনাথ ও চিন্তিত ছিল না। ‘অভিনেতা’-র বাইরে রজনী চাটুজ্জের সাধারণ অস্তিত্বের যে যন্ত্রণা তা জানতে পেরে অবাক হয়ে কালিনাথ। বড় মাপের অভিনেতা যে নিজের নিঃসঙ্গতার বেদনায় কাতর তা সাধারণ প্রোমোটারের কাছে অবিশ্বাস্য। কালীনাথের বিস্ময় জানতে পেরে রজনীকান্ত হতাশ হয়ে উক্তিটি করেন।

একাকিত্বের যন্ত্রনা

৪৫ বছরের অভিনয় জীবনের শুরুর দিকে রজনীকান্ত দর্শকের অকুণ্ঠ ভালোবাসা ও প্রশংসা লাভ করেছেন। অভিনয়ের প্রতি প্রগাঢ় অনুরাগের কারণেই সম্ভবত তার আর কাউকে আপন করে নেওয়া অবকাশ ঘটে নি। ফলে আজ তিনি নিতান্তঃ নিঃসঙ্গ। তার বউ ছেলে মেয়ে নেই, পরিজন নেই। কালীনাথ কে তিনি এই কারণে বলেন যে, বাড়ি ফিরতে আর একটুকুও ভালো লাগেনা। প্রবল একাকিত্তে যন্ত্রণা থেকেই তার বুকের ভেতরটা হিম হয়ে আসে।

মন্তব্যটি করার কারণ

রজনীকান্ত আদ্যন্ত এক নিঃসঙ্গ মানুষ-সাধারণ মানুষের মতোই তার ইচ্ছে করে সুন্দরভাবে বাঁচতে, সমাজের মানুষের মতোই অন্যের কাছ থেকে স্নেহ-প্রেম-মর্যাদা লাভ করতে। কিন্তু মানুষ তার শিল্পী সত্তার বাইরে ও যে মানুষ রজনীকান্তের অস্তিত্ব আছে তা ভুলেই গিয়েছে, যা কালিনাথের কথায় স্পষ্ট। ৬৮ বছর বয়সে নিজের চূড়ান্ত নিঃসঙ্গ জীবনের প্রতি গভীর আক্ষেপ বসতই অস্তিত্ব হারানো নিঃসঙ্গ রজনীকান্ত প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি করেছেন।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment