নাটক অভিনয়ের তীব্র অর্থাভাব
‘বিভাব’ ভারতীয় অলংকার শাস্ত্রের একটি পরিভাষিক শব্দ। রস নিষ্পত্তির বা সহৃদয় মানুষের মনে বস উপলব্ধির অন্যতম কারণ হলো বিভাব। বিভাগকে অবলম্বন করেই নাটক দর্শক মনে আনন্দ দান করে। বিশ শতকের বাংলা নাট্য আন্দোলনে এগ অন্যতম ব্যক্তিত্ব শম্ভু মিত্র। ‘বিভাব’ নাটকটির মধ্যে দিয়ে বাংলা নাট্য জগতে এক বিপ্লব সাধন করেছিলেন তিনি। অভিনয় রীতি এবং নাটককে তিনি যে অভিনবত্ব দান করেছিলেন তা বিস্ময়কর।
কিন্তু এই নতুন পরীক্ষা নিরীক্ষা প্রেক্ষিতে সক্রিয় ছিল যে কারণ তা হলো তীব্র অর্থাভাব। নাটক মঞ্চস্থ করতে আনুষঙ্গিক হিসেবে প্রাথমিকভাবে প্রয়োজন ভালো মঞ্চ, দৃশ্যানুযায়ী মঞ্চোসজ্জা, দৃশ্যপট, আলোক পক্ষেপণের কৃৎকৌশল ইত্যাদি। কিন্তু তীব্র অর্থনৈতিক দৈন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ভালো প্রযোজনা স্বার্থে তবুও তারা ঐকান্তিক নিষ্ঠার নাটক অভিনয় করতে এসব কিছুকে উপেক্ষা করে। অথচ সরকারি কর সংগ্রহের সাঁড়াশি আক্রমণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন তারা।
নাটকের নাম ‘অভাব’-কারণ
সে বিপন্নতা থেকে তারা প্রধানগত্য ভেঙে নির্বাচন করেছিলেন নতুন আঙ্গিক ভাবনার। থাকবে না বড় মঞ্চ, মঞ্চসজ্জা, দৃশ্যপট, বেশভূষা। কেবলমাত্র অভিনয় এর মধ্যে দিয়েই নাটকের বক্তব্য উপস্থাপিত হবে। ফলে, নাট্য প্রযোজনার খরচ কমে যাবে। আর্থিক অভাব থেকে যাবে আঙ্গিকের ঐশ্বর্য। কিন্তু ‘বিভাব’ নাটক কে ‘অভাব’ বলার মধ্যে দিয়ে ফুটিয়ে উঠেছে তীব্র ব্যঙ্গ। সুস্থ সংস্কৃতি কর্মকান্ড পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির তৎকালীন সরকারি অপচেষ্টা, ভ্রান্তনীতি এবং ঔদআসঈন্যএর অতি বিদ্রূপ উচ্চারিত হয়েছে এই ‘অভাব নাটক’ কথাটির মধ্যে দিয়ে।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর