“সব মিলিয়ে যেন মৃত্যুর নির্ঝুম ঘুমের আয়োজন”- কে, কোন প্রসঙ্গে মন্তব্যটি করেছেন? নিঃঝুম ঘুমের আয়োজন’ বলার কারণ কি?

উৎস

অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নানা রঙের দিন’ একাঙ্ক নাটকের উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন প্রধান চরিত্র অভিনেতা রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গ

এককালে স্বনামধন্য অভিনেতা রজনীকান্ত জীবনের শেষ পর্বে বয়সের কারণে সুতীক্ষ্ণ অভিনয় দক্ষতা হারিয়েছে। ৪৫ বছর আত্মীয়-সজন হিন্দ থিয়েটার জীবন পার করে, আজ রজনীকান্ত মাদক শক্ত। নেশা করে বাড়ি ফেরা বা ঋণরুমে ঘুমিয়ে পড়া এখন তার প্রত্যাহীক অভ্যাস। সেদিনও এইভাবে গ্রীন রুমে ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে নেশাগ্রস্ত রজনী বাবু শূন্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে আত্মবিশ্লেষণ করছিলেন। নিঃসাহস জীবনের গ্লানি, হতাশা ও পারিপার্শ্বিক নিস্তব্ধতা তাকে আহত করছিল। এই উপলব্ধি থেকে তিনি মন্তব্যটি করেছেন।

কারণ

একজন অভিনেতার মুক্তি অভিনয়ে। ৪৫ বছর অভিনয় করার পর বয়স একাকীত্ব, অসামরথের বাধা অতিক্রম করে অভিনয়কে আঁকড়ে বাঁচতে চেয়েছেন রজনীকান্ত চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সময়ের অবশ্যম্ভাবী নিয়মকে উলঙ্ঘন করার স্পর্ধা তার নেই। তিনি নেশার ঘরে ফাঁকা মঞ্চে তাই মৃত্যুর পদ ধবনি শুনেছেন। এই প্রথম নিঃসঙ্গ রজনী বাবু অন্ধকারে ডুবে থাকা প্রেক্ষাগৃহ কে শ্মশান মনে হয়েছে। মাঝরাতে মঞ্চে নিজের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নিঃসঙ্গ রজনী চাটুজ্জে, মনে করেছেন তিনি পরিত্যক্ত, অতীতের গৌরবময় জীবনকে ফিরিয়ে আনার ক্ষমতা তার নেই।। ‘উইংসে’ প্রতিরক্ষার মৃত্যু দূত, চারপাশে নিস্তব্ধতা প্রাণীর অন্ধকার যেন দেওয়াল, যেখানে কালো অঙ্গারের রচিত তার জীবনের শেষ কথা। এ সমস্ত পারিপার্শ্বিক অনুষঙ্গ গুলি দেখে তার মনে হয়েছে-“মৃত্যুর নির্ঝুম ঘুমের আয়োজন” । কোন ভুতুড়ে বাড়ির মত চারপাশ জনশূন্য। নিজের বেঁচে থাকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন নেশাচ্ছন্ন রজনীকান্ত।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment