তথ্যাবলির বিন্যাসকরণ
তথ্যসংগ্রহ করার পর তথ্যাবলির বিন্যাসকরণ করতে হয়, সংগৃহীত তথ্যাবলি বা কাঁচা স্কোরগুলিকে ক্রমানুযায়ী সাজানাে হয়। এরপর কোথ্য কতবার আছে তা চিহ্নিত করে সেইগুলি তথ্যগুলির পাশে পাশে লিখে দেওয়া হয়।
যেমন— কোনাে শ্রেণিতে 40 জন শিক্ষার্থী 100 নম্বরের শিক্ষাবিজ্ঞানের একটি পরীক্ষা দিয়েছে। এইভাবে 40 জন শিক্ষার্থীর 40টি নম্বর পাওয়া গেছে। এই নম্বরগুলি মধ্যে যেটি একবার এসেছে তার পাশে 1 এবং যেটি 2 বা 6 বা অন্য কোনাে সংখ্যা এসেছে তার পাশে সেই সাংখ্যমান লিখতে হবে ছকের বা সারণির সাহায্যে।
তথ্যের ছক বা সারি বিন্যাসের গুরুত্ব
বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যানমূলক তথ্যসমূহকে ছক হিসেবে সাজানাের গুরুত্ব নিম্নে বর্ণিত হল—
(১) জটিল তথ্য সহজভাবে উপস্থাপন: ছকবিন্যাসের মাধ্যমে যে-কোনাে জটিল তথ্য বা রাশিকে সরলভাবে উপস্থাপিত করা যায়।
(২) সহজ ও দ্রুত আলােচনা : ছকবিন্যাসের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্যাবলি দ্রুত ও সহজভাবে আলােচনা করা সম্ভব হয়।
(৩) রাশিবিজ্ঞানের বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার : ত্রুটিহীন ছকবিন্যাস থেকে শিক্ষার্থীর বিভিন্ন ক্ষেত্র সঠিকভাবে পরিমাপের জন্য সহজে | রাশিবিজ্ঞানের বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়ােগ করা হয়।
(৪) তথ্যে ত্রুটি সংশােধন ও সামগ্রিক ধারণা : ছকবিন্যাসের সাহায্যে সংগৃহীত তথ্যাবলির মধ্যে যদি কোনাে ত্রুটিবিচ্যুতি থাকে, সেগুলি যেমন সহজে সংশােধিত হয় তেমনি তথ্যাবলি সম্পর্কে একটা সামগ্রিক ধারণা শিক্ষার্থীর গড়ে ওঠে।
(৫) বৈশিষ্ট্যের গুরুত্ব বােঝা : ছকের মাধ্যমে কোনাে বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য সহজে চেনা যায়।
(৬) তথ্যের ত্রুটি অনুমান : ছকে বিন্যস্ত তথ্যাবলির মধ্যে কোনাে ত্রুটি আছে কি না তা সহজে অনুমান করা সম্ভব হয়।
(৭) তুলনামূলক আলােচনা : সারি ও স্তম্ভের মাধ্যমে ডেটা পরিবেশনের জন্য খুব সহজে ডেটা বা তথ্যগুলির মধ্যে তুলনামূলক আলােচনা করা যায়।
ছকের বিভিন্ন অংশ
ছক বা তালিকা প্রধানত দু-ধরনের। যে তালিকার মাধ্যমে একটিমাত্র বৈশিষ্ট্যের সাপেক্ষে ডেটা উপস্থাপন করা হয়, তাকে সরল তালিকাবদ্ধকরণ এবং যে টেবিলে একাধিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বিষয় উপস্থাপন করা হয়, তাকে জটিল তালিকাবদ্ধকরণ বলে। ছকের বিভিন্ন অংশগুলি নীচে আলােচনা করা হল—
(১) ছক নম্বর : সহজে নির্দিষ্ট ছকটি বের করার জন্য প্রত্যেকটা ছকের ক্রমানুযায়ী নম্বর দেওয়া হয়। ছকের উপরেই ছক নম্বরটি দেওয়া হয়।
(২) পরিচ্ছেদ শিরােনাম বা স্তম্ভশীর্ষ : ছকের উপরে স্তম্ভ ও উপস্তম্ভের উপর অর্থবহ নাম দেওয়া হয়, তাকে বলে পরিচ্ছেদ শিরােনাম বা স্তম্ভশীর্ষ (Caption)।
(৩) বক্স শিরােনাম (Box-heading) : সমগ্র ছকের উপর বক্স করে শিরােনাম দেওয়া হয়।
(৪) তারিখ : কোন্ দিনে ছকের কাজটি সম্পন্ন হল তা ছকের ডান দিকের কোণে লিপিবদ্ধ করা হয়।
(৫) সারিশীর্ষ (Stub) : ছকের বাঁ-দিকের যে অংশে সমস্ত বিষয়বস্তু সারি বরাবর বিবৃত হয়, তাকে সারিশীর্ষ বলে।
(৬) প্রধান অংশ (Body) : ছকের এই অংশে রাশিতথ্যগুলিকে লেখা হয়।
(৭) আখ্যা (Title) : পুরাে সারণির উপরে যে শিরােনাম দেওয়া হয়, তাকে বলে আখ্যা।
(৮) পাদটীকা (Footnote) : এই অংশটি কোনাে ছকের একেবারে নীচে থাকে যেখানে চার্টের তথ্যগুলির উৎস, কোনাে অতিরিক্ত সারণি। সংক্রান্ত তথ্য দেওয়া থাকে।
উপরােক্ত বর্ণনা ও চিত্রের মাধ্যমে ছকের সুস্পষ্ট শ্রেণিবিভাগ-এর সাহায্যে তথ্য ব্যাখ্যা সহজতম।