ভূমিকা
‘ধানক্ষেত থেকে’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতাটি সমকালীন সময়ের যাবতীয় ক্ষয়ক্ষতির বিরুদ্ধে বিবেকবান কবি মৃদুল দাশগুপ্তের কাব্যিক প্রতিবাদ। কবি সাহিত্যিক সেই ফটোগ্রাফার, যার সৃষ্টিতে ধরা পড়ে সময়ের অবিকল ছবি। আলোচ্য কবিতাই সেই সময়ের কথা উঠে এসেছে, তা বর্তমান সময়ের থেকে খুব দূরবর্তী নয়। ২০০৬-২০০৭ খ্রিস্টাব্দের অবক্ষয়িত রাজনীতির প্রেক্ষাপটে জন্ম ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতাটির। ফলত এই কবিতার শরীরে সে সময়ের গভীরতর অসুখের লক্ষণ স্পষ্ট।
সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে সমাজের ভালো মন্দ কবি মন প্রভাবিত হবে সেটাই স্বাভাবিক। স্বভাবতই সমাজের চরম অবক্ষয় কবির হৃদয় তৈরি করেছে গভীর প্রতিক্রিয়া। কবির কাজে অনিবার্য হয়ে উঠেছে এই প্রশ্ন-
“ক্রন্দনরতা জননীর পাশে” এখন যদি না-থাকে কেন তবে লেখা, কেন গান গাওয়া কেন তবে আঁকাআঁকি?”
মূলভাব
শিল্প সৃষ্টির প্রাসঙ্গিকতা সময়ের চাপে হারিয়ে যেতে বসেছে দেখে কবি আক্ষেপ করেছেন। ‘নিহিত ভাইয়ের শবদেহ দেখে’ ক্রুদ্ধ হয়ে উঠেছেন কবি। তার কাছে অর্থহীন হয়ে পড়েছে ভালোবাসা-সমাজ -মূল্যবোধ শব্দসমূহ। শাসকের লাল চোখ যখন মানবতা মুছে দিয়েছে মানুষের মন থেকে, তখন জঙ্গলের মধ্যে খুঁজে পাওয়া মেয়েটির ছিন্ন ভিন্ন দেহ দেখে কবি বিধাতার বিচারের অপেক্ষা করতে চাননি। একা বিপ্লব করা যায় না। তাই কবিতার মধ্যে শব্দের বিন্যাসে তিনি বিদ্রোহের বীজ রোপন করেছেন। কবির মানবতাবাদী মন সমগ্র কবিতাটি কে বেঁচে থাকার প্রশ্বাসে পরিণত করেছেন।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর