প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাঙ্ক নাটক ‘নানা রঙের দিন’ থেকে সংকলিত।
ব্যাখ্যা
রজনীকান্তের মুখ্য পরিচয় তিনি শিল্পী, অভিনেতা। ৬৮ বছর বয়সী এই অভিনেতার মঞ্চের দুর্নিবার আকর্ষণে আজও অভিনয়ের প্রতি নিবেদিত প্রাণ। নিজের জীবনের সঙ্গে রঙ্গমঞ্চের ঘনিষ্ঠতা এত নিবিড় যে, বাইরে থেকে নিজের অস্তিত্বকে তার খন্ডিতই মনে হয়।। বর্তমানে তার অভিনয় জীবনে ৪৫ বছর অতিক্রান্ত হতে চলেছে। জীবন অনিবার্য বেগে এগিয়ে চলেছে মৃত্যুর দিকে-একথা রজনীকান্ত সহজেই অনুভব করতে পারেন। উপরোক্ত ঘটনার দিন একাকী মঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে, জীবনে প্রথম ফেলে আসা দিনগুলোর কথা ভাবতে ভাবতে রজনীকান্ত উপলব্ধি করেছেন তার জীবনে ভোর নেই, সকাল, দুপুর, এমনকি সন্ধ্যেও অতিক্রান্ত। বর্তমানে অপেক্ষা শুধু রাত্রির তথা চিরনিদ্রার। তাকে অভিনয় করতেই হবে জীবন নাট্যের শেষ দৃশ্যে। কিন্তু অমলিন শিল্পী সত্তার অধিকারী রজনীকান্ত মন থেকেই এই ‘সমাপ্তি’ মেনে নিতে পারছেন না। নেশাগ্রস্ত অভিনেতা অনুরোধ করছেন-“আমাকে ছেড়ে দিন” বলে।
জীবন চক্রের অনিবার্য নিয়মের সকাল পার্থিব বস্তুর স্বাভাবিকভাবে পরিসমাপ্তি ঘটে। রজনী জানেন, তার জীবনের রঙ্গমঞ্চে ‘পরিসমাপ্তির’ পর্দা একসময় উঠবেই। নাটকের অন্যান্য কুশীল বদের মতো সে দৃশ্যে অভিনয়ের জন্য পর পাড়ের দূত প্রস্তুত। মঞ্চের ঘন অন্ধকার, নিস্তব্ধতা যেন শ্মশান ঘাটের পটভূমিতে পরিণত হয়েছে। সেই অন্ধকারে মিশে রয়েছে পরিচিত মানুষজন। তাদের অপেক্ষা কেউ আর রজনীকান্তের জীবনের অন্তিম পর্ব ঘোষণা। এই উপলব্ধি থেকে বক্তা রজনীকান্ত উদ্ধৃত উক্তিটি করেছেন।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর