কবির শুনতে পাওয়া
‘কয়েকটি কবিতা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘মহুয়ার দেশ’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে দেখি ‘মেঘ-মদির মহুয়ার দেশ’-এর কথা বলা হয়েছে, যেখানে নগর জীবনে ক্লান্ত কবি পালিয়ে যেতে চান। মহুয়ার দেশ তার কাছে বড় কাঙ্খিত। শহর জীবনের অগাধ প্রাপ্তি আর বিলাসিতা মাঝে তাই নগর কেন্দ্রিক একঘেয়েমি, বিষন্নতা, অবসাদ কবি কে মুক্তি কামি করে তোলে। কবির মুক্তি পিয়াসী মন পৌঁছাতে চায় প্রকৃতির রাজ্যে, মহুয়ার দেশ। দূর থেকে সেই প্রকৃতির দেশকে চির শান্তির দেশ বলেই মনে হয়। অথচ কবি সেখানেও দেখতে পুঁজিবাদের আগ্রাসন, ধনতন্ত্রের ভয়াবহ থাবা, মানবিক সত্তার অবক্ষয়। কবি সেখানেও শুনতে পায় কয়লা খনির হৃদয়ভেদি শব্দ।
“এখানে অসহ্য নিবিড় অন্ধকারের মাঝে মাঝে শুনি মহুয়া বনের ধারে কয়লার খনির গভীর, বিশাল শব্দ,”
কবির অসহ্য লাগার কারণ
শহরকে ভালোবেসে শহুরে সভ্যতায় লালিত পালিত হয়ে নগর জীবনের দূষিত ক্লান্তি কবির কাছে অসহ্য হয়ে ওঠে। যন্ত্র সভ্যতার প্রভাব সেখানকার পরিবেশকে অসুস্থ করে তুলেছে। সেখান থেকে ক্লান্ত হয়ে যখন কবি বিশ্রাম চান শান্ত সুন্নিবির মহুয়া দেশ সেখানেও তিনি খুঁজে পান একই রকমের জীবন-যন্ত্রণা, জীবন যাপনে ক্লান্তি। মহুয়ার দেশের শিশিরে-ভেজা সকালে ও তাই কবি দেখেন ‘অবসন্ন মানুষের’ শরীরে লেগে আছে ধুলোর কলঙ্ক। ‘নিবিড় অন্ধকারে’ও সেখানে শোনা যায় বেমানান কয়লা খনি ‘গভীর, বিশাল শব্দ।’ প্রগতির কাছে প্রকৃতির এই অসহায় আত্মসমর্পণ কবির কাছে অসহ্য বোধ হয়।
দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর