‘আমি দেখি’ কবিতা শেষ স্তম্ভকে দুটি শব্দ ‘আমি দেখি’ -নামকরণের পুনরাবৃত্তি কবি কেন করলেন তা কবিতা অবলম্বনে বুঝিয়ে দাও?

প্রেক্ষাপট

বিগত শতাব্দীর আশির দশকে নাগরিক জীবনের ‘অদ্ভুত আঁধার’ গ্রাস করেছিল মানুষকে। নগর কেন্দ্রিক বিচ্ছিন্নতা-বিষন্নতার ক্রনিক ব্যাধের সংসারে কবি হয়ে উঠেছিলেন ব্যাধি গ্রস্ত। এই ব্যাধি হতে মুক্ত লাভের জন্য উপায় হিসেবে তিনি বাগান নির্মাণ, গাছ বসানোর কথা বলেছেন। কারণ- “শহরের অসহায় করে কেবল সবুজ খায়/সবুজের অনটন ঘটে …”

এই গভীর অসুখ থেকে কবি মুক্ত হতে চান। মুক্ত বায়ুর পৃথিবীতে প্রাণ খুলে বাঁচতে চান তিনি। মুমূর্ষু মানুষগুলোকে আদেশ দেন-

“গাছ তুলে আনো/বাগানে বসাও আমি দেখি।”

গাছের প্রতি কবির আগ্রহ

উক্ত স্তম্ভকে শেষ দুটি শব্দের একটি ছোট স্তম্ভ কবি ব্যবহার করেছেন- ‘আমি দেখি’ , কবিতার নাম ও ‘আমি দেখি’ । এই পুনরাবৃত্তির কারণ হল, নামকরণে কবি তার দেখার ইচ্ছা পাঠক মনেও অনুরণিত করে দিতে চান। বক্তব্য এক বচনের, আকাঙ্ক্ষা বহুবচনের। যে সবুজ তার বাগানের বর্ধিত ও শোভিত হবে, অচিরেই তা নগরের মানুষের চোখ ও দেহ প্রভাবিত হয় বিস্তার লাভ করবে মুমূর্ষ নগরীতে। এককের মধ্যে দিয়েই যে সবুজের অভিযান শুরু হলো, অনেকের মধ্যেই ঘটবে তার সুমধুর পরিণ।

তাইতো কবি চাইলে নিজে গাছ তুলে আনতে পারেন, তবু ‘গাছগুলো তুলে আমি’ বলে হুকুম দেন। যাকে দেন সেও নাগরিক ধূসরতায়, পাণ্ডুরতায় রিক্ত। তাই ‘আমি দেখি’, আমার দেখার এত পুনরাবৃত্তি। নামকরণ আর কবিতার শেষ একই শব্দ হওয়ায় যেন কবিতাটি তার বক্তব্যবৃত্ত শেষ করেছেন। গানের যেমন ধ্রুবপদ থাকে তেমনি ‘আমি দেখি’ শব্দটির ‘ধ্রুবপদ ‘ বা ‘ধুয়াপদ’ হয়ে ওঠে। আর ‘আমি’র অন্তরালে ‘আমার’ প্রচ্ছন্ন হয়ে থাকে নিবিড় অনুভব।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment