‘অলৌকিক’ গল্প অবলম্বনে অলৌকিক ঘটনা কিভাবে বাস্তব রূপ পেল তা আলোচনা করো? অথবা, ‘অলৌকিক’ গল্পে অলৌকিক বলতে গল্পকার কি বুঝিয়েছেন লেখো?

দুটি গল্পের সমাহার

কার্তার সিং দুগ্গাল রচিত ‘অলৌকিক’ গল্পটিতে অসাধারণভাবে দুটি গল্পের বা ঘটনার বর্ণনা করা হয়েছে। দুটি গল্পের চরিত্র, কাল এবং প্রেক্ষাপট সম্পন্ন ভিন্ন হলেও ২ এর মধ্যে অত্যন্ত নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। প্রথম গল্পে বর্ণিত ঘটনা, যা আপা দৃষ্টিতে অবিশ্বাস্য বা অসম্ভব বলে মনে হয়; পরবর্তী গল্পে আরেকটি অবিশ্বাস্য ঘটনা অদ্ভুতভাবে প্রথম গল্পের ঘটনাকেও বাস্তবসম্মত হিসেবে প্রমাণিত হতে সাহায্য করেছে।

দুই গল্প

প্রথম গল্পে দেখি, গুরু নানক তার শীর্ষ দের সঙ্গে ঘুরতে ঘুরতে এসে হাজির হয়েছেন হাসান আব্দালের জঙ্গলে। ‘ভয়ানক গরম’ আর ‘গনগনে রোদ’ -চারিদিকে জনমানবের চিহ্ন ও চোখ পড়ে না। গুরু নানকের অন্যতম শীর্ষ মর্দানার প্রাণ ভয়ানক তৃষ্ণায় ব্যাকুল হয়ে পড়ল। পাহাড়ের চূড়ায় বলী কান্ধারি নিকট জলের সন্ধানে গিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়ে ফিরে আসে মর্দানা। প্রত্যাখ্যানের কারণে হিসেবে বলী কান্ধারি জবাব দেয় মর্দানার কাফের শীষ্য তাই সে জল দেবে না। প্রতিহিংসা পরায়ণ বলী কান্ধারি একটি পাথর চাঙড় নিক্ষেপ করেন পাহাড়ের চূড়ায় থেকে।

পাহাড়ে চূড়া থেকে হেলা পাথরের চাঙরটি গুরু নানকের হাতে ছোঁয়া থামিয়ে দেওয়ার কাহিনী লেখকের অবাস্তব বলে মনে হয়েছে। দ্বিতীয় গল্পে লেখক পাঞ্জা সাহেব পৌঁছে এক আশ্চর্য ঘটনার কথা শোনেন, মায়ের বান্ধবীর মুখে যে বিদেশীরা নিরস্ত ভারতীয়দের উপর গুলি চালিয়েছেন। খিদে দেশটা কাতর কয়েক দিনের ট্রেনে করে অন্যত্র পাঠানো হয়েছে। নির্দেশন দেওয়া হয়েছে ট্রেন যেন কোথাও না থামে। স্থানীয় বাসিন্দার ক্ষুদার্থ বন্দি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়ে যাওয়ার ট্রেনটিকে পাঞ্জা সাহেব দাঁড় করিয়ে তাদের কিছু খাদ্য পানীয় দেওয়ার ব্যবস্থা করেন কিন্তু সমস্ত প্রায়শই ব্যর্থ হয়, তখন সেখানকার বহু মানুষ রেললাইনে শুয়ে চলন্ত ট্রেনের নিচে জীবন দান করেন এবং নিজেদের প্রাণের বিনিময় ট্রেন টিকেট থামাতে সফল হন

অলৌকিক অথচ বাস্তব সম্মত ঘটনা

পাঞ্জা সাহেবের গল্প শুনে লেখক এর বিশ্বাস হয় যে, মানুষ ইচ্ছা শক্তিতে অসম্ভব ও সম্ভব হয় এবং গুরু নানকের ঘটনাটি অলৌকিক হলেও যে বাস্তবসম্মত তাও তিনি বুঝতে পারেন।।

দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment